ছবি: সংগৃহীত।
প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে-পরে, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় মিলল ‘মাওবাদী’ নামাঙ্কিত পোস্টার। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার বরাবাজারে গ্রাম সড়ক যোজনার বোর্ডে সাঁটানো পোস্টার মেলে। পুলিশের দাবি, মাওবাদীদের নাম দিয়ে কে বা কারা সেগুলি লাগিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার বারিকুলে জঙ্গলের রাস্তায় তল্লাশির সময়ে, কয়েক জন একটি মোটরবাইক ফেলে রেখে পালায়। ওই মোটরবাইকে থাকা ব্যাগে ‘মাওবাদী’ নামাঙ্কিত পোস্টার মেলে। সে ঘটনায় তিন জনকে আটক এবং একটি কম্পিউটার-সহ কিছু জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজ্যের জঙ্গলমহল এলাকায় এমন ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার চন্দননগরে পুরভোটের প্রচারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, ‘‘রাজ্যে মাওবাদী সমস্যা বাড়ছে। এর মূলে অনেক কারণ আছে। তাদের মধ্যে অন্যতম, তৃণমূলের অত্যাচার ও তোলাবাজিতে অনেকে হিংসার আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের অস্ত্র ছেড়ে রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে আসার অনুরোধ করব।’’ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাচ্ছে না। তাই মাওবাদীদের নাম করে উস্কানিমূলক কথা বলে প্রাসঙ্গিক হতে চাইছে।’’ তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীরও দাবি, ‘‘মাওবাদীদের সমাজের মূল স্রোতে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহলকে শান্ত করে উনি উন্নয়নের পথে এনেছেন। বিজেপির তা সহ্য হচ্ছে না।’’
বরাবাজারের লালডি গ্রামের মোড়ে এ দিন সকালে সাদা কাগজের উপরে লাল কালিতে লেখা পোস্টারগুলি দেখা যায়। তার কোনওটিতে ‘কীষানজীর মৃত্যুর বদলা চাই’, কোনওটিতে তাদের শহিদ দিবসে যোগদানের আহ্বান লেখা রয়েছে। এসডিপিও (মানবাজার) বরুণ বৈদ্য বলেন, ‘‘পোস্টারগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে পুলিশের দাবি, ওই অঞ্চলে এখন মাওবাদীদের গতিবিধি নেই।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার, প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের রাতে বারিকুলে মোটরবাইকে সন্দেহভাজন কয়েক জনকে ধাওয়া করলে, সেটি ফেলে রেখে তারা জঙ্গলে গা-ঢাকা দেয়। ওই মোটরবাইকে একটি ব্যাগ থেকে ‘মাওবাদী’ নামাঙ্কিত পোস্টার মেলে। পুলিশ জানায়, মোটরবাইকের নম্বরের সূত্রে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে মোটরবাইক, পেন ড্রাইভ ও ডেস্কটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ আটকদের মধ্যে এক জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে মাওবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।