Deucha Panchami

Deucha Panchami: ডেউচা-পাঁচামি এলাকায় মহিলাদের ধিক্কার মিছিল, ভেস্তে গেল চাকরির ফর্ম বিলির কর্মসূচি

শনিবার সকালে হরিণসিঙ্গায় লাঠিসোঁটা, কাটারি হাতে মিছিলে শামিল হন ভূমিরক্ষা কমিটির সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৪১
Share:

ডেউচা-পাঁচামিতে আন্দোলনকারীদের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।

ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লাখনির বিরোধিতাকারীরা এ বার ধিক্কার মিছিল করলেন। কার্যত এর জেরেই শনিবার থেকে বীরভূম জেলা প্রশাসনের তরফে এলাকায় চাকরির ফর্ম বিলির কর্মসূচি শুরুই করা গেল না। এই মিছিল ঘিরে শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধীর তরজা।

Advertisement

শনিবার সকালে মহম্মদবাজার থানার হরিণসিঙ্গা এলাকায় লাঠিসোঁটা, কাটারি হাতে মিছিলে শামিল হন ডেউচা-পাঁচামি আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটির সদস্যরা। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন মহিলা। কোলের শিশুদের নিয়েও মিছিল শামিল হতেও দেখা যায় তাঁদের অনেককে। হরিণসিঙ্গা গ্রামও প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি। মিছিলকারীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ডেউচা-পাঁচামি এলাকার দেওয়ানগঞ্জে তৃণমূলের মিছিলে এলাকার আদিবাসী মহিলাদের উপর বিনা প্ররোচনায় হামলা করেছে শাসকদলের দুষ্কৃতী এবং পুলিশ। এমনকি, আহত মহিলাদের চিকিৎসার জন্য এলাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয়। হামলার প্রতিবাদেই শনিবারের মিছিল বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। তাঁর দাবি, বহিরাগতরাই ডেউচা-পাঁচামিতে অশান্তি করছেন।

শনিবার থেকেই এই এলাকায় পরিবার পিছু এক জনের চাকরির জন্য ফর্ম বিলির ঘোষণা করেছিলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়। তবে তা শুরুর আগেই তড়িঘড়ি মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, আন্দোলনের ঝাঁঝ বজায় রাখতেই এই মিছিলের আয়োজন। যদিও এ নিয়ে ডেউচা-পাঁচামি আদিবাসী জনজাতি ভূমিরক্ষা কমিটি-র কারওর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ভূমিরক্ষা কমিটির আন্দোলনে এলাকার আদিবাসী তথা স্থানীয় মানুষজনের একাংশের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ইতিমধ্যেই এলাকায় ‘সেভ ডেমোক্রেসি’ নামে সংগঠনের হয়ে আব্দুল মান্নান বা বিকাশ ভট্টাচার্যের মতো রাজনৈতিক নেতারা মিছিল করেছেন। প্রকল্পের সমর্থনে পাল্টা তৃণমূলের মিছিলও দেখা গিয়েছে।

শনিবারের মিছিলের সমর্থনে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপি-র জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার দাবি, ‘‘আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি বর্বরতার অভিযোগে রাস্তায় নেমেছে আদিবাসী সমাজ।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম থেকে শিল্প তাড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রাতারাতি সাধু হবেন, তা সম্ভব নয়। আলোচনার মাধ্যমে যা করার করতে হবে। জোরজবরদস্তি করলে আমরা মানুষের পাশে থাকব। পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি-র দু’এক জনকে দল পরিবর্তন করালেও এই আন্দোলন থেমে থাকবে না।’’ যদিও মহম্মদবাজারের যুব সভাপতি তৃণমূল নেতা কালীপ্রাসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘আদিবাসীরা প্রায়ই আলাপ-আলোচনার জন্য এ ভাবে একত্র হন। মিছিলে লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হওয়ার খবর নেই। আর আদিবাসীদের মারধর করার ঘটনাও ঘটেনি। সবই তো আমাদের লোক! দেওয়ানগঞ্জে এসে সস্তার রাজনীতি করার চেষ্টা করছেন আব্দুল মান্নান, বিকাশ ভট্টাচার্যরা। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছেন, জোর করে কারও জমি কেড়ে নেওয়া হবে না। যে মানুষেরা ভুল বুঝে রয়েছেন, ভালবাসা দিয়ে তাঁদের মন জয় করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement