— প্রতীকী চিত্র।
দেশের দুই প্রান্ত থেকে পাঁচটি নতুন প্রজাতির বোলতা গোত্রের পতঙ্গ আবিষ্কার করেছেন প্রাণী সর্বেক্ষণের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এর মধ্যে নাগাল্যান্ড থেকে পাওয়া প্রজাতিটি বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। অতি ক্ষুদ্র মাপের ওই পতঙ্গ আদতে পরজীবী চরিত্রের, যাকে ‘প্যারাসাইটিক ওয়াস্প’ বলা হয়। এর চেহারা এতই ছোট যে, এত দিন এদের পৃথক ভাবে শনাক্ত করা হয়নি। এই প্রজাতির আবিষ্কারের কথা ‘জ়ুট্যাক্সা’ নামের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। পশ্চিমঘাট পর্বতমালা থেকে আরও চারটি প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিকে আবিষ্কারের কথা ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ট্যাক্সোনমি-তে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রাণী সর্বেক্ষণের অধিকর্তা ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, “এই আবিষ্কারগুলি দেশের বাস্তুতন্ত্রগত গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।” প্রাণী সর্বেক্ষণ সূত্রের খবর, নাগাল্যান্ডে পতঙ্গসন্ধানী দলটির নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী কামোদ ত্যাগী। তবে এই পতঙ্গটির সন্ধান পান বিজ্ঞানী রমেশকুমার আনন্দন। তিনি এবং আরও দুই বিজ্ঞানী অমিতকুমার ঘোষ ও বিকাশ ঝা দীর্ঘ পরিশ্রমের ফলে পতঙ্গটির শনাক্তকরণ করেন। এই পতঙ্গের ডানা, গায়ের রং এবং পুরুষাঙ্গই অন্য প্রজাতিগুলির থেকে একে পৃথক করেছে। নয়া আবিষ্কৃত পতঙ্গটির বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘সেরাফ্রন ইনিটিয়াম’। পতঙ্গবিজ্ঞানীরা জানান, এই প্রজাতিটি পরজীবী। এরা মূলত অন্য কোনও বড় মাপের পতঙ্গের শরীরের ভিতরে ডিম পাড়ে। সেই পতঙ্গটির শরীরের ভিতরেই ডিম ফুটে লার্ভা তৈরি হয় এবং শেষ পর্যন্ত পতঙ্গটির মৃত্যু হয়। ওই বিজ্ঞানী দলের প্রধান কামোদ ত্যাগীর মতে, ভারতে যে প্রচুর জীববৈচিত্র রয়েছে তা এই আবিষ্কার থেকেই প্রমাণিত হয়।
পশ্চিমঘাট থেকেও বিজ্ঞানী কে রাজমোহনের নেতৃত্বে একটি দল বোলতা গোত্রের চারটি নতুন প্রজাতির পতঙ্গ খুঁজে পেয়েছে। প্রাণী সর্বেক্ষণের অধিকর্তা জানান, আগামী দিনে এই দলটি এই প্রজাতিগুলির দেহের আণুবীক্ষণিক গঠনের চরিত্র বিশ্লেষণ করবে। এই ধরনের গবেষণা বাস্তুতন্ত্র রক্ষা এবং কৃষির ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে।