বিকাশ ভট্টাচার্য এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সোমবার বিকাশ ভবনে বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই বৈঠককে ‘ইতিবাচক’ বলা হয়েছে সরকার ও শাসদকদলের তরফে। চাকরিপ্রার্থীরাও বৈঠক থেকে বেরিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেই ওই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক আকচাআকচি শুরু হয়ে গেল তৃণমূল, বামেদের। বৈঠককে ‘ছেঁদো’ বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যসভায় সিপিএম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘যখন একটা জট খোলার চেষ্টা হচ্ছে, তখন আবার বিকাশ ভট্টাচার্য অ্যান্ড কোম্পানি নেমে পড়েছেন শকুনের দৃষ্টি নিয়ে।’’
এই বৈঠকের কোনও অর্থই নেই বলে মন্তব্য করেন বিকাশ। তাঁর কথায়, ‘‘যত ক্ষণ না বেআইনি ভাবে যাঁদের নিয়োগ হয়েছে তাঁদের চাকরি যাচ্ছে, তত ক্ষণ কিছুই হবে না।’’ ওই সিপিএম নেতার দাবি, সরকার, শিক্ষা দফতর যে জট পাকিয়ে রেখেছে, তাতে এই বৈঠক করে কোনও লাভ হবে না।
পাল্টা কুণালের কথায়, ‘‘জট একটা পেকেছে। যে বা যারা অন্যায় করেছে তাদের শাস্তি হোক। কিন্তু ছেলেমেয়েগুলো চাকরি পাক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসুরা চান যাতে তাঁদের চাকরি হয়।’’ কুণাল আরও বলেন, ‘‘কিছু আইনজীবী রয়েছেন যাঁরা মামলা করে চাকরি আটকে টাকা তুলছেন।’’ যদিও এখানে কারও নাম করেননি কুণাল। তবে আইনজীবী বিকাশ বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা চাকরি বিক্রি করে টাকা তুলেছেন, তাই ওঁরা সবাইকে নিজেদের মতো ভাবছেন।’’
কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে প্রায় তিন বছর ধরে ধর্নায় বসে রয়েছেন স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার তাঁদেরই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের অনুরোধে সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণালও। তবে তিনি ছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে। ভিন্ন পরিচয়ে। অন্য দিকে, সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং এসএসসির চেয়ারম্যান। বিকাশ ভবনে ওই বৈঠকের পর চাকরিপ্রার্থীরা বেরিয়ে এসে জানিয়েছিলেন, তাঁরা খুশি। কারণ তাঁরা জেনেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হোক। পরে বিকাশ ভবন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যও। তিনি বলেন, ‘‘আমি বরাবরই বলে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র চাকরি দিতে পারেন। তিনিই চাকরি দেবেন। আইনি কিছু জটিলতা রয়েছে। সেই জটিলতা কাটলেই চাকরি হবে।’’