চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা মেটানোর প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
আইনি জটিলতা দ্রুত কাটবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি দিতে পারবেন। উনিই চাকরি দেবেন। আমার জট কাটানোর চেষ্টা করছি। আদালত যা বলবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়োগ দিতে শুরু করব। সুপ্রিম কোর্টের একটি তারিখ পাওয়া নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সেই জট কাটলেই নিয়োগ দেওয়া শুরু হবে।
রাসমণি বলেন, ‘‘কোথায় জট, তা জানতে এসেছিলাম। আমাদের বলা হয়েছে, দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ দিয়ে বাড়ি পাঠানো হবে। কবে নিয়োগ সেটা ২২ তারিখ জানতে পারব। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে আশা করি আমরা দ্রুত স্কুলে ফিরতে পারব। জীবনটা বাঁচবে। আমরা খুবই খুশি হয়েছি আজকে।’’
চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে অবধি বিভিন্ন দফতরের মধ্যে যোগাযোগের সমস্যা হচ্ছিল। আজকের বৈঠকে বুঝলাম দফতরগুলির মধ্যে সংযোগ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আইনি জট কাটিয়ে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এখন জানতে চাই সেই ফল কবে পাবো তার তারিখ চাই। আলোচনায় বলা হয়েছে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে কতদূর অগ্রগতি হয়েছে, তার রিপোর্ট দিতে হবে। আপাতত ২২ ডিসেম্বর সেই রিপোর্ট পেশের দিন ঠিক হয়েছে। ওই দিন মিটিংয়েই আমরা এ বিষয়ে জানতে পারবো।’’
চাকরিপ্রার্থীরা জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সমস্ত আইনি জটিলতা কাটিয়ে যেন চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। মোট ৫৫৭৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিকাশ ভবনে বৈঠক শেষে বেরিয়ে এলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বাইরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুুখি হলেন।
শিক্ষামন্ত্রীর ডান দিকে বসে চাকরিপ্রার্থীরা। টেবিলের অপরপ্রান্তে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বাঁ দিকে বসেছেন, শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা। রয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। যেহেতু এসএলএসটির নিয়োগপত্র পর্ষদ দেয়, তাই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে তাঁকে। এ ছাড়া রয়েছেন এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, শিক্ষসচিব মণীশ জৈনও।
নিজস্ব চিত্র।
বৈঠকে ঢোকার আগেই কুণাল জানিয়েছিলেন, তিনি আজ শাসক দলের মুখপাত্র নন। বিকাশ ভবনে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে তিনি থাকবেন চাকরিপ্রার্থীদের তরফে। কুণাল বলেন, ‘‘তাঁরা থাকতে বলেছিলেন বলেই আমি থাকছি, আমি সরকারের কেউ নই।’’
বিকাশ ভবনে শুরু হল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধিরা। রয়েছেন ধর্না মঞ্চে মাথা কামিয়ে প্রতিবাদ জানানো এসএলএসটি চাকরি প্রার্থী রাসমণি পাত্রও। চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে বৈঠকে উপস্থিত হওয়া কুণাল ঘোষ বসেছেন রাসমণির পাশেই। শিক্ষামন্ত্রীর যে দিকে চাকরিপ্রার্থীরা বসেছেন সেদিকেই।
নিজস্ব চিত্র।
সোমবার দুপুর ৩টের সময় এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বিকাশ ভবনে বৈঠকে বসবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তার আগে বিশেষ তৎপরতা বিকাশ ভবনে। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, দুপুরের বৈঠকে ব্রাত্য থাকতে বলেছেন শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে। পাশাপাশি থাকতে বলা বয়েছে সরকারি এক ল-অফিসারকেও। এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের বিষয় আইনি জটিলতার চক্রব্যূহে ঢুকে রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন কুণাল। কী ভাবে তা কাটানো যায়, সেই পরামর্শের জন্য আইন দফতরের আধিকারিককে বৈঠকে ডেকেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে শিক্ষা দফতরের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কুণাল। কী হবে তাঁর ভূমিকা? কুণাল বলেছেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীরা আমায় অনুরোধ করেছেন। আমি ওঁদের তরফে যাব।’’ তার আগে শনিবারের ঘটনা নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টও করেন কুণাল। তিনি লেখেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ চান। অভিষেক নিয়োগ চান। তিনি তো এঁদের সঙ্গে বসেছিলেন। প্রক্রিয়া এগিয়েছিল। ব্রাত্য নিয়োগ চান। কারুর বা কিছু লোকের জন্য জটিলতা হয়েছে। এই জটিলতা কাটাতে সর্বশক্তিতে চেষ্টা চলছে। সরকার আন্তরিক। আইনি জট কাটাতে কী করা যায়, ভাবছেন তাঁরা, দেখা যাক। আমি এবং আমরা সবাই চাই, জট খুলুক। আইনি সমস্যা কাটুক। নিয়োগ হোক।’’
তৃণমূলের তরফে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ রাখেন কুণাল। সেদিনও মাথা কামিয়ে প্রতিবাদ করা মহিলা চাকরিপ্রার্থী রাসমণি পাত্রের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনের অন্যতম মুখ অভিষেক সেন বলেন, ‘‘এর আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমাদের বৈঠক করানোর ক্ষেত্রে কুণাল ঘোষই ছিলেন মূল কান্ডারি। শনিবার তিনি মঞ্চে এসেছিলেন। সোমবারের বৈঠকেও আমরা তাঁকে ডেকেছি। আমরা চেয়েছিলাম কুণালদা আমাদের হয়ে বৈঠকে থাকুন। তিনি তাতে রাজি হয়েছেন।’’
চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে কুণাল আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করে কথা বলবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কুণালের মধ্যস্থতাতেই ঠিক হয় সোমবার হবে সেই বৈঠক। বিকাশ ভবনে এসএলএসটি (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির) চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে বৈঠকে বসবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। পরে রবিবার কুণাল জানান, তিনি নিজেও হাজির থাকবেন ওই বৈঠকে। তবে শাসক দলের সদস্য হিসাবে নয়। চাকরিপ্রার্থীদের তরফে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে ওই বৈঠকে হাজির থাকবেন তিনি।
মেয়ো রোডে চাকরির দাবিতে গত প্রায় তিন বছর ধরে টানা ধর্নায় বসেছিন স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা। গত শনিবার সেই মঞ্চে প্রতিবাদ প্রদর্শন করতে এসে মাথার চুল কামিয়ে ফেলেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর ভোগপুরের বাসিন্দা এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী। এর পরেই শাসক দল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ছুটে গিয়েছিলেন ধর্না মঞ্চে।