(বাঁ দিকে) সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র, তাপস সাহা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
‘কালীঘাটের কাকু’র পরে এ বার তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় আরও এক জনের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হল। ফারাক বলতে এই যে, ‘কাকু’র ক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহ করেছিল ইডি। আর তাপসের ক্ষেত্রে করল সিবিআই। ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে যে কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল ইডিকে তাপসের ক্ষেত্রে তার একাংশও করতে হল না সিবিআইকে। অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে সিবিআইয়ের তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি জানান বিধায়কের আইনজীবী।
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার তদন্তে ফের তলব করা হয়েছিল নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপসকে। শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে পৌঁছন তিনি। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমায় আবার ডাকা হয়েছিল। তদন্তে সহযোগিতা করব।” তাপসের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য জানান, বিধায়কের কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার জন্য তলব করা হয়েছিল। শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তাপস আগের মতোই তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলে জানান তাঁর আইনজীবী। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে যান তাপস। কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়া হয়েছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে মাথা নাড়তে দেখা যায় বিধায়ককে।
সিবিআই সূত্রে খবর, একদা তাপস-ঘনিষ্ঠ প্রবীর কয়ালের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের পর তৃণমূল বিধায়কেরও কণ্ঠস্বরের নমুনা নেওয়া হল। ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ফোন কথোপকথনের একটি রেকর্ডিং তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। তাই কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে সেটির সত্যাসত্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাপসের বিরুদ্ধে। এই মামলায় আগেও তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চলেছে।
এর আগে নিয়োগ দুর্নীতির অন্য মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করেছিল আর এক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। কিন্তু এই নমুনা সংগ্রহ নিয়ে বহু টালবাহানা হয়। বিষয়টি পৌঁছয় আদালতেও। নিয়োগ মামলার যে রিপোর্ট ইডি আদালতে জমা দেয়, সেখানে ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ এবং তাঁর সিইও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তি সংক্রান্ত রিপোর্টও ছিল। ওই সংস্থাতেই কাজ করতেন সুজয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করে ইডি। গত এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্টে কণ্ঠস্বরের নমুনা সম্বলিত রিপোর্ট পেশ করে ইডি জানায়, তারা যা সন্দেহ করেছিল, তা মিলে গিয়েছে। তবে কোন কথোপকথনের সঙ্গে কণ্ঠস্বরের নমুনা মিলিয়ে দেখা হয়েছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি।