প্যানিক বাটনের কার্যকরিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে নির্ভয়াকাণ্ডের পর দেশের সমস্ত ধরনের গণপরিবহণ ক্ষেত্রে ভেহিকলস লোকেশন ট্র্যা কিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) লাগানো বাধ্যতামূল করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। নির্দেশ মেনে রাজ্যে চলাচল করা যানবাহনে ভিএলটিডি বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালের মে মাসের মধ্যে রাজ্যে চলাচল করা সব যানবাহনেই ভিএলটিডি লাগানো হয়েছে। এই ভিএলটিডির অংশ হিসাবে সব গাড়িতেই লাগানো হয়েছে প্যানিক বাটন। গাড়ি কোনও দুর্ঘটনা বা সমস্যায় পড়লে যাত্রী বা চালকেরা প্যানিক বাটন টিপে সরাসরি পুলিশ প্রশাসনের কাছে বিপদসঙ্কেত পৌঁছে দিতে পারবেন বলেই জানিয়েছিল পরিবহণ দফতর।
কিন্তু এখন সেই প্যানিক বাটনের কার্যকরিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি। সোমবার পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে তারা। জয়েন্ট ফোরাম অফ ট্রান্সপোর্ট অপারেটর্সের ছাতার তলায় মোট পাঁচটি পরিবহণ সংগঠন ভিএলটিডি-সহ প্যানিক বাটনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অভিযোগের সপক্ষে অনলাইন ক্যাব অপারেটার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের উপর এক প্রকার চাপ দিয়েই ভিএলটিডি গাড়িতে বসাতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, প্যানিক বাটন টিপলেও পুলিশি সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা জেনেছি যে, ভিএলটিডির সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের সংযুক্তিকরণের বিষয়টি পুরোপুটি গড়ে ওঠেনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক বছর আগে ভিএলটিডি লাগানো হয়েছিল। এক বছর পর তা রিনিউয়ালের সময় হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে, রিনিউ না করা হলে গাড়ি চালানোর ছাড়পত্র মিলবে না। তার উপর রিনিউয়ের জন্য ২০০০ টাকাও খরচ করতে হচ্ছে। যে হেতু প্যানিক বাটনের বিষয়টি এখনও সরকারি ভাবে সড়গড় হয়নি, তাই এই শর্ত আমরা তুলে নিয়ে রিনিউ ছাড়াই গাড়ি চালানোর অনুমতি চেয়েছিলাম পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে।’’
পাশাপাশি, দূষণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও মন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েছে সংগঠনগুলি। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, দূষণ সার্টিফিকেট প্রধানত নেওয়া হচ্ছে পেট্রল পাম্প থেকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পেট্রল পাম্পের মেশিনগুলি আপডেট করা হয় না। সে ক্ষেত্রে দূষণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোনও ত্রুটি রয়ে গেলে, তা গাড়ির মালিক বা চালকের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। আবার কলকাতা শহরের ইএম বাইপাসে যে রিমোট সেন্সিং ডিভাইস (আরএসডি) লাগানো হয়েছে, তাতে যাতায়াতের সময় কোনও গাড়ির দূষণে ত্রুটি ধরা পড়লে ১০ হাজার জরিমানা হচ্ছে। এবং এই পুরো বিষয়টিই হচ্ছে চালকদের অজান্তে। তাই এ বিষয়েও পরিবহণ মন্ত্রীকে আলোকপাত করতে বলা হয়েছে। সিটি সার্বাবান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘একেই লকডাউনের পর বেসরকারি পরিবহণের কোমর ভেঙে গিয়েছে। তার ওপর যদি নিত্যনতুন প্রযুক্তির কথা বলে বাস-মিনিবাস-সহ গণপরিবহণের ওপর রাজ্য সরকার চাপ বাড়ায়, তা হলে আমাদের পক্ষে সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’’