(বাঁ দিকে) মহম্মদ সেলিম। অধীররঞ্জন চৌধুরী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে তৃতীয় দফায়, ৭ মে। কিন্তু সেই ভোটের ৩৫ দিন আগে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের ‘বিজয় ঘোষণা’ করে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীররঞ্জন চৌধুরী।
মঙ্গলবার সকালে বহরমপুরেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন অধীর। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘মহম্মদ সেলিম জিতে বসে আছেন। জিতবেন।’’ অতীতে একাধিক ভোটে দেখা গিয়েছে বাম ভোট কংগ্রেসের দিকে গেলেও, কংগ্রেসের ভোট সিপিএম তথা বামেদের দিকে যায় না। অস্বীকার না-করে অধীরের জবাব, ‘‘সেটা একটা পর্ব ছিল। কিন্তু সময় বদলায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভাবনাও বদলায়।’’ অর্থাৎ অধীর নিশ্চিত, এ বার মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে কংগ্রেসের ভোট সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সেলিমের দিকে যাবে।
ঘটনাচক্রে, সেলিম বা সিপিএমের সঙ্গে বোঝাপড়া সম্পর্কে এই প্রথম মুখ খুললেন অধীর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই মন্তব্যের অব্যবহিত আগেই আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’তে সেলিমই তাঁর এবং অধীরের যুগলবন্দিকে ‘জুটি’ বলে উল্লেখ করেছেন। দু’জনে লড়ছেন পাশাপাশি আসনে।
অধীরের এই মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। শাসকদলের অন্যতম নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী জানেন সেলিম হেরে বসে আছেন। তাই ভোকাল টনিক দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাতে কাজ হবে না।’’ কুণাল আরও বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নেতারা সিপিএমের দালালি করেন বলেই তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয়েছিল। যে সিপিএমের হাতে গ্রামবাংলায় কংগ্রেস কর্মীরা খুন হয়েছেন, মার খেয়েছেন, তাঁরা কখনওই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে ভোট দেবেন না।’’ বর্ধমান দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ আবার অধীরের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘নিজে জিতবেন কি না ঠিক নেই, উনি এখন সেলিমের ওকালতি করতে নেমেছেন।’’
তবে অধীরের এই মন্তব্য বাম শিবিরে উৎসাহ জুগিয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা সিপিএম বহরমপুর এবং মুর্শিদাবাদ দুই কেন্দ্রে দু’টি ছবি তৈরি করতে চায়। তারা চায়, অধীর যেন সেলিমের মনোনয়নের দিন মিছিলে থাকেন, আর সেলিম থাকুন বহরমপুরে। এক নেতার কথায়, ‘‘তা হলে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে যে জড়তা এখনও রয়েছে, তা কেটে যাবে। ভোট ট্রান্সফার অনেক মসৃণ হবে।’’ কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত সে ব্যাপারে জেলা সিপিএম কোনও সবুজ সঙ্কেত পায়নি জেলা কংগ্রেসের থেকে। তবে অধীরের এই মন্তব্যের পর অনেকেই মনে করছেন, এ বার তা সম্ভব হবে।