শান্তিনিকেতনে সেমিনারে আনিসুজ্জামান। ফাইল চিত্র
বাংলাদেশের বিখ্যাত সাহিত্যিক, সাহিত্য সমালোচক এবং অধ্যাপক মহম্মদ আনিসুজ্জামানের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শান্তিনিকেতন। বিশ্বভারতীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘকালীন যোগাযোগ ছিল। বিভিন্ন সেমিনার, বই প্রকাশ অনুষ্ঠান বা বিশেষ বক্তৃতার জন্য তিনি বারবার শান্তিনিকেতনে এসেছেন। বৃহস্পতিবার তাঁর প্রয়াণের খবর এসে পৌঁছতেই শোকের ছায়া নামে বিশ্বভারতীতে।
বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অতনু শাসমল বলেন, ‘‘আনিসুজ্জামান শুধু সুসাহিত্যিক এবং সুসমালোচক ছিলেন না, একজন ভাল মনের মানুষও ছিলেন।’’ তাঁর স্মৃতিচারণ, ‘‘যখন বাংলা বিভাগে একটি সেমিনারে এসেছিলেন, তখন আমার একটি বইও প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন শেষ তাঁর সঙ্গে দেখা হয়, তখন সেই কথা মনে করিয়ে দিতেই তিনি সস্নেহে আমাকে আশীর্বাদ করেন। সেখান থেকে ফিরে এসে আর কখনও ওঁর সঙ্গে দেখা হবে না, একথা কল্পনাও করতে পারিনি।’’ অতনুবাবু বলছেন, ‘‘ব্যক্তিগত খারাপ লাগা তো রয়েইছে, তবে তার থেকেও বেশি খারাপ লাগার কারণ হল, বাংলা সাহিত্য তার এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারাল।’’ আনিসুজ্জামানের সম্পাদনায় ‘সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্রনাথ: বাংলাদেশের শ্রদ্ধাঞ্জলি’ নামে একটি বই বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ থেকে প্রকাশিত হয়।
বাংলা বিভাগের আরেক অধ্যাপক অমল পাল বলেন, “আনিসুজ্জামানের মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের এক অপূরণীয় ক্ষতি। বিশ্বভারতী এবং শান্তিনিকেতনের সঙ্গে তাঁর আত্মিক যোগ ছিল। বিশ্বভারতী বাংলা বিভাগে তিনি বেশ কিছুদিন অতিথি অধ্যাপকের দায়িত্বও সামলেছেন। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ ছিল। উপাচার্য রজতকান্ত রায়ের আমলে কালানুক্রমিক রবীন্দ্র রচনাবলী প্রকাশের জন্য যে কমিটি তৈরি করা হয়, তারও সদস্য ছিলেন আনিসুজ্জামান।’’
অমলবাবুর কথায়, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর মৃত্যুর প্রতি প্রকৃত সম্মান প্রদর্শনও হয়তো আমরা বাংলা বিভাগের পক্ষ থেকে করে উঠতে পারব না, কিন্তু আনিসুজ্জামানের মতো ব্যক্তিত্ব বাংলা সাহিত্যজগৎ এবং সাহিত্য অনুরাগীদের মনে অমর হয়ে থাকবেন বলেই আমার বিশ্বাস।’’