বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতী থেকে শীঘ্রই সরানো হবে বিতর্কিত ফলক। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে দ্রুত নতুন ফলক বসানো হবে। সোমবার বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দিল বিশ্বভারতী। নতুন ফলকে কী লেখা থাকবে, তার জন্য একটি বয়ানও পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, তাতে সংক্ষিপ্ত বিবরণে শ্রদ্ধার সঙ্গে বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম স্মরণ করা হয়েছে। কেন্দ্রের সেই নির্দেশ মেনে নতুন ফলক বসবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কয়েক দিন আগেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসাবে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হয়েছে। তার পরেই গত ১৬ নভেম্বর তাঁর বসানো বিতর্কিত ফলকটি বদলের নির্দেশ আসে কেন্দ্র থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শিক্ষা মন্ত্রকের নির্দেশে বলা হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন ফলক বসাতে হবে। ফলকে কী লেখা থাকবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে। পাশাপাশি ফলক সরানো নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করতে বলা হয়েছে। সোমবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের সই করা বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, কেন্দ্র যে ভাবে নির্দেশ দিয়েছে, তা মাথায় রেখেই নতুন বসানো হবে। নতুন ফলক বসানোর কাজ যাতে বিলম্বিত না হয়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বা বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। সম্প্রতি উপাসনাগৃহ, ছাতিমতলা এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়ণের সামনে শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয়। তাতে আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই। এই নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। রাজ্যপালের মতো অনেকেই ফলকটি সরানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু, বিদ্যুৎ অনড় ছিলেন নিজের অবস্থানে।
চলতি মাসের শুরুতেই উপাচার্য হিসাবে মেয়াদ ফুরিয়েছে বিদ্যুতের। তার ঠিক এক সপ্তাহ পরেই কেন্দ্র থেকে নির্দেশ আসে। শিক্ষা মন্ত্রক থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে নতুন ফলকে থাকবে না প্রধানমন্ত্রী কিংবা উপাচার্যের নাম। সূত্রের খবর, নতুন ফলকে লেখার জন্য একটি বয়ান পাঠানো হয়েছে। তাতে রবীন্দ্রনাথের নাম থাকার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ছোট বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ইংরেজি, বাংলা এবং হিন্দি— তিন ভাষায় ওই অনুচ্ছেদ নতুন ফলকে লেখা থাকবে বলে বিশ্বভারতীর সূত্র মারফত খবর মিলেছিল।
অনুচ্ছেদটি যাতে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের সঙ্গে মানানসই হয়, সেই মতো প্রয়োজনে তা সম্পাদনা করার জন্যই কমিটি গঠন করতে বলেছিল কেন্দ্র। সেই নির্দেশ মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ছ’জনের একটি কমিটিও গঠন করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সোমবারের বিবৃতিতে তা-ও জানানো হয়েছে। বিশ্বভারতী সূত্রের দাবি, কমিটিতে রয়েছেন বাংলাদেশ ভবনের কো-অর্ডিনেটর মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রভবনের অধ্যক্ষ অমল পাল, অধ্যাপিকা শকুন্তলা মিশ্র, অধ্যাপক অনিল কুমার, গ্রন্থন বিভাগের অধ্যক্ষ অমৃত সেন এবং রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষা মন্ত্রক থেকে নতুন ফলকের যে বয়ান পাঠানো হয়েছে, তা চূড়ান্ত করার কথা এই কমিটি। বয়ান চূড়ান্ত করে বর্তমান উপাচার্যের কাছে পাঠানো হলে দ্রুত পুরনো ফলক বদলে নতুন ফলক বসানো হবে।