বিশ্বভারতীর এক ছাত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ করলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ইস্তফার দাবিতে তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভরত এক ছাত্রীকে চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে মারধরের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার ওই ছাত্রী ছাড়াও অবস্থান বিক্ষোভে বসা পড়ুয়াদের সঙ্গে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের ধস্তাধস্তি হয় বলেও অভিযোগ। যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রায় ১৪ দিন ধরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যে বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বিদ্যুতের বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি মঞ্চ বেঁধে সেখানে অবস্থানে বসেছেন তাঁরা। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি, বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।
মঙ্গলবার গাড়ি করে নিজের বাসভবন থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন উপাচার্য। সেই সময় ছাত্রছাত্রীরা তাঁর বা়ড়ির গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ওই ছাত্রছাত্রীদের বেশ কিছু ক্ষণ ধরে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়। যদিও শেষমেশ বাড়ি থেকে বার হতে পারেননি উপাচার্য। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, ছাত্রছাত্রীরা তাঁর বাসভবনের সামনে চেয়ার পেতে বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, পদত্যাগ করতে হবে উপাচার্যকে। পাশাপাশি, বিশ্বভারতীর যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের সাসপেন্ড এবং শোকজ করা হয়েছে, সেই নির্দেশগুলিও প্রত্যাহার করতে হবে।
মীনাক্ষী ভট্টাচার্য নামে বিক্ষোভরত এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মতো দূরত্ববিধি মেনে ১৪ দিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে অবস্থান বিক্ষোভ করছি। আজ (মঙ্গলবার) উপাচার্যের বাড়ি থেকে বার হলে ওঁর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে হাতজোড় করে আমাদের কথা শোনার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। আমাদের পড়াশোনার অধিকার চাইছি। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকাটা অপরাধের নয়। তবে সে জন্য তিনি যে ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে আমাদের কেরিয়ার নষ্ট করছেন, তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’
মীনাক্ষীর আরও অভিযোগ, ‘‘উপাচার্যের সিকিউরিটি অথবা ভাড়া করা গুন্ডা, তা ঠিক জানি না, তাঁদের দিয়ে আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করে চুলের মুঠি ধরে বুকে-পিঠে কিল মেরে যে ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে তাতে হাতজোড় করে বলছি, আমি পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের বাসিন্দা হিসাবে, ছাত্রী ও মহিলা হিসাবে রাষ্ট্রপতি এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দ্বারস্থ হচ্ছি, আমাদের সঙ্গে অন্যায়ের বিচার করুন। আমাদের পড়াশোনা করার অধিকার দিন।’’