উপাসনাগৃহে শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। পাশে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
বিশ্বভারতীর সাপ্তাহিক বুধবারের উপাসনায় আচার্যের আসনে বসানো হল শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরী মুখোপাধ্যায়কে। বিশ্বভারতীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্কহীন কোনও ব্যক্তিকে আচার্যের আসনে বসানোর ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে কখনও হয়েছে বলে মনে করতে পারেননি কেউই। তবে খ্রিস্টোৎসবের মতো বিশেষ সান্ধ্যমন্দিরে এর আগে শিল্প ও সাহিত্য জগতের ব্যক্তিত্বরা এসেছেন।
লকডাউনে তিন মাস বন্ধ থাকার পরে নতুন করে উপাসনা শুরুর সময় থেকেই করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন পরিস্থিতিতে যাঁরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন, তাঁদের সম্মানিত করছে বিশ্বভারতী। চিরাচরিত পদ্ধতির বাইরে বেরিয়ে বুধবারের সাপ্তাহিক উপাসনায় আচার্যের আসনে বসানো হচ্ছে তাঁদের। এর আগে পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক অনির্বাণ দাশগুপ্তকেও একই কারণে সাম্মানিক আচার্য পদে বসানো হয়েছিল। এ দিন সেই আসনে বসানো হল কস্তুরীদেবীকে।
পড়ুয়া, প্রাক্তনী থেকে আশ্রমিক— অনেকেই এমন সম্মাননার তারিফ করেছেন। শান্তিনিকেতন কর্মিমণ্ডলীর যুগ্ম সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “প্রায় চার মাস হল যাঁরা কোনও রকম ছুটি না নিয়ে আমাদের পরিষেবা দিয়ে চলেছেন, তাঁদের প্রতি এই সম্মান প্রদর্শন বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যকে আরও গৌরবময় করবে। এই মানুষগুলিও দৈনন্দিন লড়াইয়ের মাঝে একটু অন্য রকম স্বাদ পাবেন।”
আরও পড়ুন: আমপান-তালিকায় থ প্রশাসন, ৯০ শতাংশই ভুয়ো আবেদন
বিশ্বভারতীর আর একটি সূত্র আবার মনে করাচ্ছে, ২১ জুন একটি শ্লীলতাহানির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শান্তিনিকেতন থানায় ডেকে পাঠানো হয় বিশ্বভারতীর এক আধিকারিক ও এক শিক্ষককে। তার পরেই ওসিকে আচার্যের পদে বসানোর ঘটনাকে কেউ কেউ মিলিয়ে দেখতে চাইছেন। শান্তিনিকেতন কবিগুরু হস্তশিল্প উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আশ্রমের ভাবধারাকে সম্মান জানিয়ে ওসি আজ মন্দিরে আচার্যের আসনে বসেছেন বলেও বিশ্বাস। এর সঙ্গে তদন্তের আশা করি কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা পুলিশের ভূমিকা ও এই সম্মানকে সাধুবাদ জানাই।”
আরও পড়ুন: বিনামূল্যের রেশনে চাপ পড়তে পারে কোষাগারে
এ দিন আচার্য, শান্তিনিকেতন থানার ওসি বলছেন, “বিশ্বভারতীর এই সম্মাননা আমি বাহিনীর তরফে গ্রহণ করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।”