বিজেপির বন্‌ধ ঘিরে দফায় দফায় অশান্তি ব্যারাকপুরে

রবিবার পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়েছিল জগদ্দল-ভাটপাড়া। মাথা ফাটে সাংসদ অর্জুন সিংহের। ওই দিন পুলিশের উপরে হামলা, রাস্তা অবরোধের ঘটনায় আরও ১১ জন মহিলা-সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৮
Share:

প্রতীকী চিত্র। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

দলের সাংসদের উপরে ‘পুলিশি আক্রমণের’ প্রতিবাদে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টা ব্যারাকপুর মহকুমা বন‌্ধে দফায় দফায় অশান্তি ছড়াল সোমবার। তৃণমূল-বিজেপি সমর্থকদের সংঘর্ষে জখম হন কয়েক জন। অবরোধ তুলতে লাঠি চালায় পুলিশ। দিনের শেষে ৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

রবিবার পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়েছিল জগদ্দল-ভাটপাড়া। মাথা ফাটে সাংসদ অর্জুন সিংহের। ওই দিন পুলিশের উপরে হামলা, রাস্তা অবরোধের ঘটনায় আরও ১১ জন মহিলা-সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে পুলিশের উপরে হামলা চালানোর জন্য বেশ কয়েক জনকে চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই মামলায় নাম রয়েছে অর্জুন এবং তাঁর বিধায়ক-পুত্র পবন সিংহেরও।

তৃণমূলের যে পার্টি অফিস দখল নিয়ে রবিবার গোলমাল, রাতের দিকে তার দখল নেয় বিজেপি। সোমবার সেখানে বিজেপি কর্মীদের বসে থাকতে দেখা যায়। দুপুরের দিকে পুলিশ অফিসটি সিল করে দেয়।

Advertisement

বন্‌ধ ‘সফল’ করতে সোমবার ভোর থেকে নেমে পড়েছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন বাজারে গিয়ে আনাজ বিক্রেতাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জগদ্দলের বাসুদেবপুর মোড়ে সোমবার হাট বসে। সেখান থেকেও ফিরিয়ে দেওয়া হয় ক্রেতা- বিক্রেতাদের। বেলা গড়াতেই জায়গায় জায়গায় শুরু হয় অবরোধ। কোথাও কোথাও জোর করে, হুমকি দিয়ে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।

ব্যারাকপুরের নোনাচন্দন পুকুরে অবরোধ তুলতে গেলে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ বাধে। হালিশহরে বিজেপি জোর করে বাজার বন্ধ করে অবরোধ করে। তৃণমূলের শ’দুয়েক কর্মী-সমর্থক তাদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১০ জন জখম হন।

দুপুরের দিকে টিটাগড়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিটি রোড অবরোধ করা হলে পুলিশ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের তোলার চেষ্টা করে। পুলিশের দাবি, অবরোধকারীরা ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ লাঠি চালায়। সকালের দিকে কাঁকিনাড়া স্টেশনে অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। মিনিট দশেকের মধ্যে রেল পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়।

দফায় দফায় সড়ক অবরোধের ফলে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে মানুষ জনকে। ব্যারাকপুর-কাঁচরাপাড়া এবং ব্যারাকপুর-বারাসতের মধ্যে বাস চলাচল বন্ধ ছিল এ দিন। চলেনি অন্য যানবাহনও। ব্যারাকপুর থেকে কাঁচরাপাড়া পর্যন্ত প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। স্কুল-কলেজে পঠনপাঠন হয়নি। ভাটপাড়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে একটি স্কুল খোলা হলে বিজেপির লোকেরা সেটি জোর করে বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ।

দত্তপুকুর ও আমডাঙায় বিজেপি-তৃণমূল সংর্ঘষে কয়েক জন জখম হয়েছেন। আমডাঙায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘণ্টা চারেক অবরোধ চলে। বেড়াবেড়ি পঞ্চায়েতের সামনে নীলগঞ্জ-সন্তোষপুর রোডও বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে গণেশ পুজো নির্বিঘ্নেই হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পাঞ্চলের পুজো উদ্যোক্তারা। বিভিন্ন বাজারে পুজো সামগ্রীর দোকান খোলা ছিল।

রবিবারের গোলমালে পুলিশের একটি রিভলভার খোয়া গিয়েছে বলে কমিশনারেট সূত্রের খবর। সোমবার পর্যন্ত তা উদ্ধার করা যায়নি। সেই ঘটনায় পুলিশ পৃথক মামলা করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement