বর্ধমানের নির্মল ঝিল শ্মশানে নিয়ম না মেনে কোভিডে মৃতদের দেহ ঘিরে উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষজন। অভিযোগ, সেই সুযোগে মোটা অঙ্কের টাকা হাতাচ্ছে একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি। অভিযোগ, কোভিডে মৃত্যু হওয়া পরিবারের সদস্যদের বোকা বানিয়ে মোটা টাকা কামাচ্ছে তারা। সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানে দালাল চক্রের এক পান্ডাকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই হল শ্মশানে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বর্ধমান শহরে বেশ কয়েকটি নাসিংহোমে দালাল চক্র সক্রিয়। অভিযোগ, তারা করোনায় মৃত ব্যক্তির পরিবারের থেকে মোটা টাকা আদায় করে কোভিড-বিধি অমান্য করে সৎকার করছে। সোমবার এমনই এক মৃতের পরিবারের থেকে টাকা নিয়ে রাতে দেহ বর্ধমানের নির্মল ঝিল শশ্মানে দাহ করতে যায় তারা। পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও বেসরকারি নাসিংহোমের এক কর্মীও ছিলেন ওই দলে। সেই সময় শ্মশান চত্বরে অদূরে বসে থাকা এলাকার লোকজন হাতে নাতে ধরে ফেলেন তাঁদের। চলে গণধোলাই।
পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী করোনায় মৃতের দেহ শ্মশানে আনতে হবে রাত ১০টার পর। প্রশাসনের নিয়ম আছে, কোভিডে মৃতদের দেহ কোনও রকম ধর্মীয় আচার ছাড়াই সরাসরি পুড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যখন-তখন দেহ নিয়ে এসে বোঝাপাড়া করে পরিবারের লোকেদের নিয়ে ধর্মীয় নিয়মবিধি মেনে পোড়ানো হচ্ছে। পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা নার্সিংহোমের কর্মী এবং মৃতের পরিবারের সদস্যদের হাতেনাতে ধরে মারধর শুরু করলে খবর যায় বর্ধমান থানায়। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান থানার আইসি পিন্টু সাহা-সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকরা। ততক্ষণে অবশ্য দালালচক্রের অন্যেরা গা ঢাকা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রবি দাস বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন ধরেই এসব চলছে। মোটা টাকার বিনিময়ে কোভিডে মৃতের দেহ পোড়ানো হচ্ছে।’’ এই বিষয়ে বর্ধমান পুরসভার আধিকারিক অমিত গুহ বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েই পুরসভা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যাতে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত শ্মশানে পুলিশ ক্যাম্প করা হয়। পাশাপাশি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, বেসরকারি নাসিংহোমে কেউ কোভিডে মারা গেলে তার তথ্য পুরসভাকে যেন বাধ্যতামূলক ভাবে জানানো হয়।