R G Kar Medical College And Hospital Incident

লালবাজারে প্রদীপ-মান্নান, শ্যামবাজারে বিজেপির ত্রয়ী

বড়বাজার জেলা কংগ্রেসের ডাকে ‘লালবাজার অভিযান’কে ঘিরে এ দিন ধুন্ধুমার বেধে যায় বৌবাজার এলাকায়। কলেজ স্কোয়ারে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫১
Share:

লালবাজারে আটক প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান-সহ কংগ্রেস নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।

আর জি কর-কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে কংগ্রেসের বিক্ষোভে বুধবার ফের উত্তপ্ত হল রাজপথ। আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদেই শহরের অন্য দিকে এক মঞ্চে দেখা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।

Advertisement

বড়বাজার জেলা কংগ্রেসের ডাকে ‘লালবাজার অভিযান’কে ঘিরে এ দিন ধুন্ধুমার বেধে যায় বৌবাজার এলাকায়। কলেজ স্কোয়ারে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে লালবাজার অভিমুখে শুরু হয় মিছিল, যাতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতোই। ফিয়ার্স লেনের মুখে ব্যারিকেড, জলকামান-সহ মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করতেই শুরু হয় ধরপাকড়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে বিক্ষোভকারীদের। প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, পুর-প্রতিনিধি সন্তোষ পাঠকদের গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে চলে যায় পুলিশ। রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন অমিতাভ চক্রবর্তী, রোহন মিত্র, ইন্দ্রাণী দত্ত চট্টোপাধ্যায়, সুমিত্রা নিয়োগীরা। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, মিতা চক্রবর্তী-সহ অন্যদেরও তার পরে গ্রেফতার করা হয়। মহিলা কর্মী-সহ ৪২০ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল লালবাজারে। তাঁরা ছাড়া পেয়েছেন সন্ধ্যার পরে।

বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা মান্নানের অভিযোগ, ‘‘এই সরকার অপরাধীদের ধরতে চায় না, হাসপাতালে দুষ্কৃতী তাণ্ডব ঠেকাতে পারে না পুলিশ। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে!’’ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কুণাল ঘোষ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের খাতির করে লালবাজারে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ! যার জবাবে কংগ্রেস নেতা অমিতাভের মন্তব্য, ‘‘আমাদের আন্দোলন ছিল নগরপালের পদত্যাগের দাবিতে। কলকাতা পুলিশের আধিকারিক বা কর্মীরা যদি খাতির করে নিয়ে গিয়ে থাকেন, তার মানে আমাদের দাবির সঙ্গে তাঁরাও সহমত!’’

Advertisement

আদালতের অনুমতি নিয়ে শ্যামবাজারে এ দিনই শুরু হয়েছে বিজেপির ধর্না। চলার কথা পাঁচ দিন। ধর্নার প্রথম দিনে দলের তিন প্রধান মুখের একত্রে হাজিরা বিজেপি শিবিরে স্বস্তি এনে দিয়েছে। আর জি কর-কাণ্ডকে সামনে রেখে যখন রাজ্যের একাধিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও নাগরিক সমাজ শাসক দলের বিরুদ্ধে পথে নামছে। তখন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের তিন শীর্ষ নেতাকে একসঙ্গে রাজপথে না দেখা যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল বিজেপির অন্দরে। আর জি করে নানা ধরনের চক্র চালানো হত বলে অভিযোগ করে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্তের দাবি, ‘‘যত তাড়াতাড়ি মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেন, তত ভাল!’’ দিলীপেরও বক্তব্য, ‘‘দিল্লির নির্ভয়া ৭ বছর পরেও বিচার পেয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপরে সেই আস্থা রাখতে পারছেন না রাজ্যের মানুষ। সেই জন্যই সুবিচারের দাবিতে আমরা মমতার পদত্যাগ দাবি করছি।’’ ধর্না-মঞ্চের বাইরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু এ দিনও বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সোমবারের মধ্যে পদত্যাগ করুন। তা না-হলে মঙ্গলবার পুলিশের গুলি চললে মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী থাকবেন!’’ প্রসঙ্গত, আগামী মঙ্গলবার, ২৭ অগস্ট ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজে’র নামে ডাক দেওয়া নবান্ন অভিযানে তিনি থাকবেন বলে জানিয়ে রেখেছেন বিরোধী দলনেতা। বিজেপির তরফে আজ, বৃহস্পতিবার ডাক দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যভবন অভিযানের। সুকান্তের আহ্বান, ‘‘লক্ষ্মী বারে ডাক দিয়েছি আমরা, ঘরের লক্ষ্মীর জন্য আসুন সবাই।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত সপ্তাহে যে পথে মিছিল করেছিলেন, সেই রাস্তা ধরেই এ দিন মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল হয়েছে বিজেপি-প্রভাবিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘খোলা হাওয়া’র উদ্যোগে। মিছিলে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু, প্রাক্তন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী, তাপস রায়, শঙ্কুদেব পণ্ডা, কৌস্তভ বাগচী প্রমুখ। কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিলেন মমতা শঙ্কর, অঞ্জনা বসু, পার্নো মিত্র-সহ সংস্কৃতি জগতের কিছু ব্যক্তিত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement