প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা জলি মোহন কল। তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘ইন সার্চ অফ আ বেটার ওয়ার্ল্ড’ (ডান দিকে)।—ফাইল চিত্র।
মুসলিম লিগের ডাকে কলকাতায় সে দিন প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস। সেই ১৯৪৬ সালের ১৬ অগস্ট তৎকালীন পোর্ট ট্রাস্ট কর্মচারী সংগঠনের সম্পাদক তরুণ মিছিল নিয়ে বেরিয়েছিলেন পথে। ময়দান পর্যন্ত পৌঁছতেই দেখলেন, ততক্ষণে শহরের রাস্তায় লাশ পড়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে দিয়েছে দাঙ্গা। দ্রুত এলাকা পাহারার সিদ্ধান্ত নিয়ে মিছিল বন্ধ করে ফিরে গিয়েছিলেন তাঁরা। সে দিনের সেই কর্মচারী সংগঠনের সম্পাদক এবং পুরনো নানা কাহিনি জীবন্ত করে তুলতে সক্ষম মানুষটিই এ বার ইতিহাস হয়ে গেলেন! শতবর্ষে পা দেওয়ার মাত্র তিন মাস আগে শহরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে প্রয়াত হলেন কমিউনিস্ট নেতা জলি মোহন কল। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন সোমবার সকালে, হাসপাতালে নিয়ে গেলে সন্ধ্যায় মৃত্যু।
কলই ছিলেন অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির শেষ জীবিত সদস্য। পার্টি বিভাজনের পরে তিনি অবশ্য আর কোনও দলেরই সরাসরি সদস্যপদ রাখেননি। অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির কলকাতা জেলা সম্পাদকও ছিলেন পঞ্চাশের দশকে। তাঁর স্ত্রী, বাম মহিলা আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য মুখ মণিকুন্তলা সেন প্রয়াত হয়েছেন আগেই। চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য দেহ দান করে গিয়েছেন কল। লকডাউনের মধ্যে কলের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার কথা বলেছিলেন বিমান বসু। মৃত্যুসংবাদ পেয়ে এ দিন তিনি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাও। সিপিআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার বলেছেন, ‘‘যাঁর হাত থেকে পার্টিতে সদস্যপদ লাভ করেছি, সেই নেতাকে অন্তরের শ্রদ্ধা জানাই।’’ ঘাত-প্রতিঘাতে ভরা তাঁর নিজের কাহিনি কল লিখে গিয়েছেন আত্মজীবনীমূলক বই ‘ইন সার্চ অফ আ বেটার ওয়ার্ল্ড’-এ।