ছবি: সংগৃহীত।
রেলে বঞ্চিত বাংলা।
রেলের আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত খতিয়ান আজ প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। যার ভিত্তিতে বিরোধীদের দাবি, গত কয়েক বছরের মতো এ বারও বঞ্চিত হল বাংলার ঘোষিত রেল প্রকল্পগুলি। অধিকাংশ প্রকল্পের বরাদ্দ বেড়েছে নামমাত্র। তাতে প্রকল্পের কাজে গতি আসা কঠিন। কিছু প্রকল্পকে আবার বাজেটে মাত্র এক হাজার টাকা দিয়ে কোনও ভাবে বাঁচিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। রেল বাজেট বিতর্কে এই বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল সাংসদেরা। যদিও তাতে পরিস্থিতির বিশেষ হেরফের হবে বলে মনে করছেন না ওই সাংসদেরাই। বিরোধী শিবিরের যুক্তি উড়িয়ে রেল মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, ভাঁড়ার বাড়ন্ত। তাই গত বছর প্রকল্পগুলিতে যেমন টাকা খরচ হয়েছে, সেই অনুপাতেই এ বছর বরাদ্দ নির্ধারিত হয়েছে।
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য একাধিক রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু মমতা-ঘোষিত অধিকাংশ রেল কারখানার নাম চলতি বাজেট নথিতে নেই বলে অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল। কাঁচরাপাড়া রেল কোচ কারখানায় বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা। ৭৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হতে যাওয়া কারখানাটির পিছনে সরকার এ যাবৎ বিনিয়োগ করেছে মাত্র ২৯ কোটি টাকা। যেখানে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন, সেখানে মাত্র ৩০ লক্ষ টাকায় কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একই ভাবে বাংলাদেশের খুলনার সঙ্গে কলকাতার যাত্রী ট্রেন চালানোর পরিকাঠামো খাতে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রেল। ডানকুনিতে দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মালদহে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও বেলেঘাটায় ট্র্যাক প্রশিক্ষণ ইউনিটের জন্য মাত্র ৫ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে অর্থের জোগান কম থাকায় নতুন নির্মাণের পরিবর্তে যাত্রী পরিষেবা বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছে রেল মন্ত্রক। সে ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গের জন্য সুখবর নেই। গোটা মালদহ ডিভিশনের ছ’টি প্ল্যাটফর্ম উঁচু করা, প্ল্যাটফর্ম শেড, যাত্রী ওভারব্রিজ, নতুন স্টেশন ভবন, পানীয় জল ও বেঞ্চ পাতার খাতে বরাদ্দ হয়েছে সাকুল্যে এক লক্ষ টাকা।
সম পরিমাণ টাকায় একই কাজ করার জন্য নির্দেশ এসেছে হাওড়া ডিভিশনের ১৯টি স্টেশনে। পূর্ব রেলে যাত্রী সুবিধার্থে মাত্র দু’টি স্টেশনে এসক্যালেটর বসানোর জন্যও বরাদ্দের পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা। নৈহাটি ও রানাঘাট স্টেশনে যাত্রী সাবওয়ে নির্মাণে বরাদ্দ হয়েছে যথাক্রমে ১৫ ও ২০ লক্ষ টাকা। ওই সামান্য টাকায় কাজ কী ভাবে শেষ হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রেল মন্ত্রকের অভ্যন্তরেও। বাজেট নথিতে অবশ্য তারাপীঠ ও তারকেশ্বর স্টেশনের উন্নতিতে ৫.৫ কোটি বরাদ্দ করেছে রেল। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও বরাদ্দের প্রায় পুরোটাই আসবে পর্যটন মন্ত্রক থেকে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।