ক্ষণিকের অসাবধানতা, ডাঙায় তোলা মাত্র জলে ঝাঁপ দিল বোয়াল মাছ! মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পুকুরে মোবাইল খুঁজতে এসে কার্যত ল্যাজেগোবরে অবস্থা হল শ্রমিকদের। হাতে-পায়ে বিঁধল মাছের কাঁটাও। কিন্তু এত কিছুর পরেও মিলল না বিধায়কের দ্বিতীয় ফোনটি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। গোয়েন্দাদের তল্লাশি অভিযানের মধ্যে কিছু ক্ষণের জন্য ছাদে গিয়ে নিজের দু’টি মোবাইল বাড়ির পাশের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। মোবাইলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে, এই ভেবে পুকুরে চিরুনিতল্লাশি শুরু করেন গোয়েন্দারা। সেই সময় পুকুর থেকে বেশ কিছু জিনিস উঠে এসেছে। তার মধ্যে রয়েছে— দু’টি বোয়াল মাছ, ২৮টি কই মাছ, গোটা তিরিশেক শিঙি, দু’টি বড় শোল। এ ছাড়াও জালে ধরা পড়েছে বেশ কয়েকটি কাদা জলের মাছ।
কিন্তু মোবাইল উদ্ধার না হওয়ায় শুক্রবার রাতেই পুকুর ছেঁচে জল তোলার সিদ্ধান্ত নেন গোয়েন্দারা। বসানো হয় তিনটি পাম্প। সেই পাম্প বন্ধ হয় শনিবার রাত ১টা নাগাদ। প্রাথমিক ভাবে সিবিআই মনে করেছিল, পুকুরের সমস্ত জল তুলে ফেলা গিয়েছে। কিন্তু ভোর থেকে আবার পুকুরে জল বাড়তে থাকে। ভোর ৩টে নাগাদ আরও একটি পাম্প চালানো হয় জল তোলার জন্য। রবিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিট নাগাদ ওই পুকুরের সব জল তুলে ফেলা সম্ভব হয়। এর পর ৭টা ৩৫ মিনিট নাগাদ একটি মোবাইল খুঁজে পান গোয়েন্দারা। কিন্তু এখনও মেলেনি দ্বিতীয় ফোনটি।
জীবনকৃষ্ণের পুকুরে টানা ১৪ ঘণ্টা ধরে কাজ করা স্থানীয় শ্রমিক অমর বীর জানান, মাছ ছাড়াও পুকুর থেকে আরও বেশ কিছু জিনিস মিলেছে। তার মধ্যে আছে পুরনো জামা কাপড় ভর্তি দু’টি ব্যাগ, তিন জোড়া ছেঁড়া চটি, একটি টর্চলাইট, বেশ কয়েকটি মাটির ভাঙা পাত্র। স্থানীয় বাসিন্দা রূপ কর্মকার বলছেন, ‘‘পানা পুকুরে সাধারণত শিঙি গোত্রের মাছ থাকে। আর পুকুরে পরিত্যক্ত অবহৃত জিনিস পাওয়া যাবে, এটাই তো স্বাভাবিক।’’