প্যালেস্টাইনে ‘গণহত্যা’র প্রতিবাদে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে মিছিল। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
ইজ়রায়েলি হামলা ও ‘গণহত্যার’ প্রতিবাদে এবং প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়ে স্বর জোরালো হচ্ছে কলকাতায়। পথে নামছে একাধিক সংগঠন। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এবং ফেডারেশনগুলির ডাকে মঙ্গলবার মিছিল হয়েছে শহরে। আরও একাধিক মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে আজ, বুধবার। প্যালেস্টাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদের সামনের সারিতে রয়েছে বিভিন্ন বামপন্থী দল ও সংগঠনগুলি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রশ্নে অবস্থান স্পষ্ট না করলেও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দও প্রতিবাদে শামিল।
প্যালেস্টাইনে লাগাতার লাগাতার বোমাবর্ষণের বিরুদ্ধে এ দিন ধর্মতলার লেনিন মূর্তি থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিল সিটু, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, ইউটিইউসি, এআইসিসিটিইউ-সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন ফেডারেশন। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে, ‘বর্বর হামলা বন্ধ করতে হবে’ এবং রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী প্যালেস্টাইনকে আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা দিতে হবে। শ্রমিক নেতৃত্বের অভিযোগ, গাজ়া তথা প্যালেস্টাইনে শিশু, নারী, বৃদ্ধদের লাগাতার হত্যা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, তার মধ্যে চার হাজার শিশু। মিছিলে শামিল হয়েছিলেন সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু, রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, আইএনটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি কামারুজ্জামান, এআইসিসিটিইউ-এর রাজ্য সম্পাদক বাসুদেব বসু প্রমুখ। প্যালেস্টাইনের জনতার পক্ষে সংহতি জানিয়ে এ দিন মিছিল হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। শহরে মিছিল করেছে বাম ছাত্র-যুবরাও।
একই দাবি নিয়ে আজ, বুধবার পৃথক ভাবে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে সারা ভারত শান্তি ও সংহতি সংস্থা (এআইপিএসও), এসইউসি এবং এপিডিআর-সহআরও কিছু গণ-সংগঠন। প্রতিবাদীদের মূল বক্তব্য, ইজ়রায়েলের হিংস্র কার্যকলাপের নিন্দায় মানুষ পথে নামলেও নরেন্দ্র মোদীর সরকার আক্রান্ত প্যালেস্টাইনবাসীর পক্ষে ভারতের দীর্ঘ দিনের সংহতি বোধের ঐতিহ্যকে ভুলুন্ঠিত করছে। এমনকি, রাষ্ট্রপুঞ্জে পেশ করা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পক্ষেও মোদী সরকার সমর্থন জানায়নি। ইজ়রায়েলের পাশাপাশি আমেরিকা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকারও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে এই সব কর্মসূচি থেকে।
জমিয়তের সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রের সরকারের পাশাপাশি আরব দেশগুলিকেও যুদ্ধ বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। শহরে টিপু সুলতান মসজিদ চত্বর থেকে হো চি মিন সরণি পর্যন্ত আগামী ৬ নভেম্বর মিছিলের ডাক দিয়েছে জমিয়তে। তার পরে মার্কিন কনসাল জেনারেলের কাছে দাবি জানাতে যাওয়ার কথা সিদ্দিকুল্লাদের।