মল্লিকবাজার থেকে গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম এবং কলকাতা বিমানবন্দরে পীযূষের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।
অতিমারির এই দুঃসময়ে মরণোত্তর অঙ্গদান করে কয়েক দিন আগেই নজির সৃষ্টি করেছিলেন ভাটপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজ়েন্টিভ সংগ্রাম ভট্টাচার্য। তার কিছু দিনের মধ্যেই এ বার অঙ্গদান করলেন উত্তরপাড়ার লরেন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা পীযূষকান্তি ঘোষাল (৪৪)।
পারিবারিক সূত্রের খবর, পেশায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পীযূষবাবুর নিজের ব্যবসা ছিল। ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে কয়েক দিন আগে। ভর্তি ছিলেন মল্লিকবাজারে ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে। শনিবার সেখানেই তাঁর ‘ব্রেন ডেথ’ হয়। পীযূষবাবুর কিডনি ও ত্বক প্রতিস্থাপন করা হবে এসএসকেএম হাসপাতালে, চোখ যাবে শঙ্কর নেত্রালয়ে, হায়দরাবাদের কেআইএমএস হাসপাতাল পাবে তাঁর ফুসফুস ও যকৃৎ। মল্লিকবাজার থেকে গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম এবং কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁর বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।
পীযূষবাবুর বাড়ি বর্ধমানের বৈঁচিগ্রামে। তাঁর স্ত্রী উত্তরপাড়া গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা। উত্তরপাড়ায় একটি ফ্ল্যাট কেনেন তাঁরা। তাঁদের ১২ বছরের এক ছেলে আছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস ধরে পীযূষবাবুর মাথায় ও পিঠে যন্ত্রণা হচ্ছিল। স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখানো হয়। বিভিন্ন চিকিৎসাতেও যন্ত্রণার উপশম না-হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে স্ক্যান করাতে বলেন। স্ক্যানিংয়ে তাঁর অ্যাডভান্স স্টেজের ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে এবং তাঁকে মল্লিকবাজারে ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করানো হয়।
আরও পড়ুন: সফল পেশাদাররা দলে দলে সক্রিয় রাজনীতিতে, কারণ কি ‘লকডাউন সিনড্রোম’?
আরও পড়ুন: ইডি-এনআইএ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে, সঙ্কট কেরলে
পীযূষবাবুর স্ত্রী মিষ্টি মুখোপাধ্যায় রবিবার জানান, মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ার কিছু দিনের মধ্যে তাঁর স্বামীকে যে এ ভাবে চলে যেতে হবে, সেটা তাঁরা কেউ ভাবতে পারেননি। তাঁর এবং তাঁদের পরিবারের ইচ্ছাতেই ওঁর অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘‘আমার স্বামী খুব পরোপকারী ছিলেন। রক্তদান থেকে শুরু করে নানা জনহিতকর কাজের মধ্যে থাকতেন। সবাই ওঁকে খুব ভালবাসত। মৃত্যুর পরেও উনি মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকুন, এটাই আমাদের ইচ্ছা। তাই এই অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত,’’ বলেন মিষ্টিদেবী।