Government School

শিক্ষক নেই, পড়ুয়াও নেই, মঙ্গলকোটে বন্ধ পড়ে থাকা স্কুলেই এখন হাট বসে প্রতি মঙ্গলবার! চলে বিকিকিনি

পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অভাবে বন্ধ পড়ে রয়েছে স্কুল। সেই স্কুলে এখন প্রতি মঙ্গলবার নিয়ম করে হাট বসে। পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৫০
Share:

পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম জুনিয়র হাই স্কুলে হাট বসছে প্রতি মঙ্গলবারে। —নিজস্ব চিত্র।

স্কুলে মাস্টারমশাই নেই। নেই পড়ুয়াও। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধই পড়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম জুনিয়র হাই স্কুল। এখন সেই স্কুলে হাট বসছে প্রতি মঙ্গলবার। স্কুলের বারান্দা, মাঠ ‘দখল’ করে পসরা সাজিয়ে চলছে বিকিকিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, স্কুল আবার আগের হালে ফিরুক। গ্রামের স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পড়ুয়াদের যেতে হয় দূরের স্কুলে। গ্রামবাসীরা চাইছেন, এই স্কুল আবার নতুন করে চালু করুক প্রশাসন।

Advertisement

রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের অনুপাতে সমস্যার কথা নতুন নয়। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, প্রায় ২৫০ স্কুলে ছাত্র ভর্তির হার কার্যত শূন্য। অথচ সেগুলিতে পাঁচ-ছয় জন করে শিক্ষক রয়েছেন। আবার এমনও অনেক স্কুল রয়েছে যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি থাকলেও তুলনায় শিক্ষক কম।

মঙ্গলকোটের এই স্কুলও সেই পরিস্থিতির শিকার। গ্রামবাসীদের দাবিতে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে এই স্কুলের পথচলা শুরু হয়। সরকার অনুমোদিত এই স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য দু’জন অতিথি শিক্ষক ছিলেন শুরুতে। পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১০০-র উপরে। তবে এই স্কুলে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগও হয়নি, পড়ুয়ার সংখ্যাও কমে আসে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একমাত্র অতিথি শিক্ষক পড়াতে আসা বন্ধ করলে স্কুলেও তালা পড়ে যায়।

Advertisement

এখন সেই স্কুল চত্বরে পড়াশোনার বদলে হাট বসছে প্রতি মঙ্গলবার। হাট বারে এ স্কুল দেখে বোঝার উপায় থাকে না যে কয়েক বছর আগেও এই ভবনে পড়ুয়ারা আসত, তাদের ক্লাস হত। বাধাকপি, ফুলকপি, লাউ-সহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সব্জি থেকে শুরু করে মশলাপাতি— কী নেই! দুটো লাভের আশায় স্কুল চত্বরের হাটে বসছেন গরম গরম চপ-বেগুনি বিক্রেতাও।

গ্রামবাসীদের একাংশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন, যাতে স্কুল নতুন করে চালু করা হয়। জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্কুল চত্বরে হাট বসার কথা তাঁর জানা নেই। তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, স্কুলে যদি হাট বসে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। পাশাপাশি, স্কুল চালু করার বিষয়েও দফতর উদ্যোগী হবে বলেও জানান তিনি।

ভাল্যগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য কামরুল ইসলাম স্কুলে হাট বসার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “করোনার সময় গ্রামের ভিতরে থাকা হাট আমরা রাস্তার ধারে নিয়ে এসেছিলাম। রাস্তায় গ্রামবাসীদের যাতায়াতের অসুবিধার জন্য হাট স্কুলে বসানো হচ্ছে।”

বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “কী ভাবে সেখানে হাট বসছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement