রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ক্ষমতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকেও মুক্ত হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। মঙ্গলবার দিনভর শিলিগুড়িতে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একথা বলেন তিনি। তার সঙ্গেই যাদবপুর-কাণ্ডে নিজের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট করেছেন রাজ্যপাল।
গত ২০ সেপ্টেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ছাত্রবিক্ষোভের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে মন্ত্রীকে উদ্ধার করে আনেন। সোমবার শিলিগুড়িতে যাদবপুর প্রসঙ্গে রাজ্যপালের দাবি, নিজের সাংবিধানিক সীমানা সম্পর্কে তিনি ভালভাবেই অবগত। কিন্তু তার সীমানা কেউ অতিক্রম করতে চাইলে তা তিনি বরদাস্ত করবেন না।
তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসিত। সেখানে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত নয়। রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় যে কোনও সমস্যা সমাধানে ক্ষমতা বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ একেবারেই উচিত নয়।’’ তিনি এ প্রসঙ্গে জানান, পদে আসীন হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তিনি অধ্যাপক এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। তাঁর দাবি, সমস্যা নিজেদের মতো করে সমাধানের পথ খুঁজলেই সেখানে স্বচ্ছতা বজায় রাখা সম্ভব। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘যিনি নিরপেক্ষ নন, তাঁর এ সব কথার জবাব দেওয়া অর্থহীন।’’
মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও কেন তিনি প্রাঙ্গণে ঢুকতে গেলেন? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। সেদিনের পরিস্থিতির পর মনে হয়েছিল, আমি গেলে ছাত্রছাত্রীরা আমার সঙ্গে কথা বলবেন। ঘটনার সময় উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্য কেউই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন না। তাই আমার মনে হয়েছে, কোনও একটি ছাত্রের কিছু হলে পুরো সমাজ প্রভাবিত হতে পারে। তাই ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতেই যাদবপুরে গিয়েছিলাম।’’ রাজ্যপাল এ দিনও জানান, যাদবপুরের ঘটনার দিন তাঁর সঙ্গে চার বার মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে সম্মান জানিয়েই তিনি বলবেন না বলেও জানান।