টেটের নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও টেট নিয়ে মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। যার পর আবার প্রশ্ন উঠে গেল নির্ধারিত সময়ে এই পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। যার পরই প্রশ্ন ওঠে, টেটের নিয়োগ ঠিক ভাবে হবে তো? শুক্রবারের মামলার পর সেই সংশয় আরও গভীর ভাবে দানা বাঁধল।
শুক্রবার যে বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে, তা হল টেটে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএড বা ডিএড ডিগ্রিধারীদের পাশাপাশি, যাঁরা এই বিষয়ে পড়াশোনা করছেন তাঁদেরও যোগ্য বলে ধরা হচ্ছে কেন? ফলে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বদলানো দরকার। টেটের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে দ্বিতীয় শর্তের তৃতীয় প্যারাগ্রাফে যোগ্যতা প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছিল, যাঁরা বিএড এবং ডিএড প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাঁরাও টেট ২০২২-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ তা নিয়েই আপত্তি তুলে মামলা করেছেন। মামলা হয়েছে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারও টেট নিয়ে মামলা উঠেছিল হাই কোর্টে। সেই মামলারও বিষয় ছিল, শিক্ষাগত যোগ্যতা। প্রাথমিক স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষকের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন)-এর পাশাপাশি বিএড (ব্যাচেলর অব এডুকেশন) যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবেন। তা নিয়ে আপত্তি তুলেই হাই কোর্টে মামলা করেন সুপর্ণা চট্টোপাধ্যায়-সহ বেশ কয়েক জন টেট পরীক্ষার্থী। তাঁদের বক্তব্য ছিল, টেটের জন্য যেখানে ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিলেই হয়ে যায় সেখানে বিএডদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে কেন। মামলাটি বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চে উঠেছিল। মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এখন তো দেখা যাচ্ছে বার বার সমস্যার মুখে পড়ছে পর্ষদ। কোনও পদক্ষেপ করলেই মামলা হচ্ছে।’’ যদিও বৃহস্পতিবার এই মামলায় কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয়নি হাই কোর্ট।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে পর্ষদ। তার পর থেকেই ওই বিজ্ঞপ্তির বিভিন্ন ধারা নিয়ে একের পর এক মামলা হচ্ছে হাই কোর্টে। তাতেই প্রশ্ন উঠছে নতুন টেট নিয়োগের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
উল্লেখ্য, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের ফলে অস্বস্তিতে রয়েছে রাজ্য। এই অবস্থায় নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বার বার টেট বিজ্ঞপ্তি ঘিরে জট তৈরি হওয়ায় এখন পরীক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে।
এই সব মামলার মধ্যেও আদালত অবশ্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করেনি। তবে ঘটনাক্রমে দেখে অনেকে মনে করছেন, পর্ষদের প্রায় সব পদক্ষেপই এখন আদালতে বিচারাধীন। পর্ষদের যে কোনও নতুন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। ফলে নিয়োগের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারে তলিয়ে যেতে চলেছে।