ফাইল চিত্র।
আপত্তি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা শিবিরের বড় অংশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য দেশজোড়া অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা (সিইউইটি) চালু হলে কোচিং সেন্টারগুলিই ফুলেফেঁপে উঠবে এবং গুরুত্ব হারাবে স্কুলের পঠনপাঠন। তবে ওই অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার বিষয়টি যাদের কাছ থেকে এসেছে, সেই ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমারের দাবি, এই ব্যবস্থায় কোচিংয়ে ভিড় বা কোচিং সেন্টারের রমরমা মোটেই বাড়বে না। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রথম বছর বাদ দিয়ে পরে প্রতি বছর অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে দু’বার।
এর আগে ইউজিসি-প্রধান জানিয়েছিলেন, দ্বাদশ শ্রেণির ফল নয়, স্নাতর স্তরে ভর্তিতে গুরুত্ব পাবে অভিন্ন প্রবেশিকার ফল। দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর শুধু স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করার যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। তার পরে শিক্ষা মহল থেকে অভিযোগ ওঠে, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলকে গুরুত্বহীন করে দিয়ে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলে প্রবেশিকা পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য পড়ুয়ারা কোচিং সেন্টারের দ্বারস্থ হতে থাকবে। তার জেরে দেশ জুড়ে বাড়বে কোচিং ব্যবসার রমরমা। স্কুলের পড়াশোনার আর কোনও গুরুত্ব থাকবে না। তবে ইউজিসি-র চেয়ারম্যান এ বার জানাচ্ছেন, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে না। অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে দ্বাদশ শ্রেণির সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে। তাই প্রবেশিকা দিতে রাজ্যের বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে না।
অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নেবে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। ইউজিসি-প্রধান জানিয়েছেন, চলতি বছরে এক বার এই পরীক্ষা নেওয়া হলেও আগামী বছর থেকে বছরে দু’বার ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এনটিএ বছরে চার বার সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নেয়। ছাত্রছাত্রীরা চার বারই পরীক্ষা দিতে পারেন। তার মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরকেই ভর্তির যোগ্যতামান হিসেবে ধরা হয়। শিক্ষা মহলের ধারণা, অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষাতেও এমনটাই হবে।
প্রথমে বিশ্বভারতী-সহ সব কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এই অভিন্ন প্রবেশিকা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়, ডিমড বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অভিন্ন প্রবেশিকার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে ইউজিসি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, যে-ভাবে রাজ্য সরকারকে কিছু না-জানিয়ে অভিন্ন প্রবেশিকার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়ার জন্য ইউজিসি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারিশ-চিঠি লিখেছে, তাঁরা তার বিরোধিতা করবেন। ইউজিসি-প্রধান জানিয়েছিলেন, দেশের আটটি ডিমড বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই এই প্রবেশিকার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি নিতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছে। বুধবার টুইট করে তিনি জানান, গুজরাতে রাজ্য সরকারের অধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি এ দিন কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এই প্রবেশিকা পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।