প্রায় একই সময়ে দুই বান্ধবীর এই ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
দু’জনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব। পাড়ায় হোক বা স্কুলে— দুই বান্ধবীকে সব সময় একসঙ্গেই দেখা যেত। গত শুক্রবারও স্কুল থেকে তারা একসঙ্গেই বাড়ি ফিরেছিল। তার কিছু ক্ষণ পরেই দু’জনের বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাদের দেহ উদ্ধার হয়। প্রায় একই সময়ে দুই বান্ধবীর এই ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলার জুনপুটে কোস্টাল থানার হুগলি গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত দুই ছাত্রীর নাম সোনালি কামিলা (১৫) ও দীপালি মান্না (১৬)। তাঁরা মাজিলাপুর হাইস্কুলের দশম শ্রেণীতে পড়ত। শুক্রবার তাদের স্কুলে পরীক্ষা ছিল। দু’জনের বাড়ির মধ্যে দূরত্ব প্রায় ১০০ মিটার। দু’জনেরই দোতলা বাড়ি। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর সন্ধ্যা নাগাদ পরিবারের লোকেরা মেয়েদের দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন।
আলাদা আলাদা ভাবে বাড়ির দোতলার ঘরগুলিতে খুঁজতে গিয়ে দুই পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান, ছাদের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ রয়েছে। জানলায় উঁকি মেরে দেখতে যায় ঘরের কড়িতে নিজের গলায় ওড়না দিয়ে ঝুলে আছে তারা। দু’জনকে একই রকম ভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় মেলায় আত্মহত্যার তত্ত্ব আরও জোরদার হয়েছে। হুগলি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সমর রঞ্জন দাস জানিয়েছেন, এর পর দুই পরিবারের লোকেরা চেঁচামেচি শুরু করলে পাড়ার লোকেরা গিয়ে দরজা ভেঙে উদ্ধার করেন তাদের।
আরও পড়ুন: নির্যাতনের প্রতিবাদে শ্বশুরবাড়ির কাছেই বাবাকে নিয়ে আমরণ অনশনে বধূ
আরও পড়ুন: জনসংযোগেও কড়া নজরদারি প্রশান্তের
ঘটনার পর পুলিশ দেহ উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের নিয়ে যায়। জুনপুট কোস্টাল থানার তরফে জানানো হয়েছে, দুই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ দিন দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে বাড়ির লোকের হাতে। কিন্তু পরিবারের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে তারা আত্মঘাতী হয়েছে। তবে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে এলাকায়। স্থানীয়দের একটা অংশের মতে, এই ঘটনার সঙ্গে ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে। তাঁদের দাবি, দুই বান্ধবীর মধ্যে এক জন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে হয়তো কোনও গোলমাল হতে পারে। ঠিক কী ঘটেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।