তৃষিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
বাম যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁদের ডাকা ব্রিগেডে শামিল হবেন প্রচুর সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক। আদৌ তা হল কি না বোঝা যাবে রবিবার। কিন্তু তার আগে সুদূর জার্মানির হামবুর্গ থেকে ব্রিগেডে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতায় এসে পৌঁছেছেন এক তরুণী। নাম তৃষিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি ভবানীপুর, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। যে ঠিকানা জানান দিচ্ছে, এই তরুণী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ার। একেবারে মমতার প্রতিবেশী।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি জার্মানির হামবুর্গের বাসিন্দা। প্রথমে পড়াশোনা। তার পর চাকরির কারণে থেকে গিয়েছেন সে দেশেই। আনন্দবাজার অনলাইনকে তৃষিতা জানিয়েছেন, রবিবার হাজরা মোড় থেকে তিনি মিছিলে হেঁটে ব্রিগেডে যাবেন। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য বার আমি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এসে জানুয়ারির গোড়াতেই হ্যামবুর্গ ফিরে যাই। কিন্তু এ বার ব্রিগেডের কর্মসূচি জানতে পেরেছিলাম গত অক্টোবরে। তাই এই ব্রিগেডে থাকব বলেই ডিসেম্বরের বদলে জানুয়ারিতে এসেছি।’’ তৃষিতা এ-ও জানিয়েছেন, এই সময় আসতে গিয়ে বিমান ভাড়ায় তাঁর অতিরিক্ত খরচ হয়েছে।
তৃষিতা এমনিতে বাম পরিবারের মেয়ে। তাঁর বাবা-মা দু’জনেই সিপিএমের সক্রিয় কর্মী। তবে বিদেশে থাকার কারণে এই তরুণী সরাসরি রাজনীতি করতে পারেন না। তবে অনেকে বলেন, রাজনীতি সংক্রামক। নেশার মতো। ২০১৯ সালে যখন সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে বিদেশের মাটিতেও প্রবাসীরা প্রতিবাদে নেমেছিলেন, তখন হামবুর্গ ও বার্লিনের কর্মসূচিতে ছিলেন তৃষিতাও। তবে এ বার ব্রিগেডে কেন? তৃষিতা বললেন, ‘‘শিক্ষা ও কাজের দাবিতে ব্রিগেড সমাবেশ হচ্ছে। আমি সেই দাবির সঙ্গে একমত। শিক্ষা ও কাজের আকালের জন্যই আমায় দেশ ছাড়তে হয়েছিল। আমার মতো অনেককেই এই পথ বেছে নিতে হয়।’’ তৃষিতার মা স্বপ্না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যুবদের ন্যায্যা দাবিতে রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশ। আমার মেয়ে যে তা উপলব্ধি করে এই সময়ে এসেছে, ওঁর মধ্যে যে এই বোধটা আমরা তৈরি করতে পেরেছি, সেটাই আমাদের কাছে তৃপ্তির।’’
সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তৃষিতা। জার্মানির একটি বিমান সংস্থায় কর্মরত তিনি। জার্মানি যাওয়ার আগে কলকাতায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেছেন কয়েক বছর। তার পর উচ্চশিক্ষার জন্য যান জার্মানি। রবিবারের বাম ব্রিগেডে মূল আকর্ষণ মিনাক্ষীই। যুবনেত্রী যে এই মুহূর্তে দলের ‘মুখ’ তা মানছেন সিপিএম নেতারাও। তৃষিতাও বলেন, মিনাক্ষীর কথা, সাধারণ জীবনযাপন তাঁকেও আকর্ষিত করে। তাঁর কথায়, ‘‘মিনাক্ষীর মধ্যে একটা নেতৃত্ব দেওয়ার স্বাভাবিক গুণ রয়েছে। তাঁর যাপনে আরোপিত কিছু দেখি না।’’