ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
আদালত তথা আইনি ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তাঁর কথায়, "আদালত অবমাননার দায়ে কার জেল হয়েছে? যে সরকার চালায় তার হাতেই সব ক্ষমতা।" বিপ্লবের এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে সমালোচনার ঝড়। অনেকে মনে করছেন, একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি যদি আদালতকে অগ্রাহ্য করেন তবে তা গণতন্ত্রের জন্য বিপদ সঙ্কেত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ওই ধরনের মন্তব্য বিপর্যয়ের শামিল।
রবিবার ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের একটি ভিডিয়ো নেট মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে আদালত অবমাননা নিয়ে তাঁকে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। ওই ভিডিয়োতে বিপ্লব বলেন, "অনেকে বলেন আদালত অবমাননা হয়ে যাবে। আদালত অবমাননার দায়ে কার জেল হয়েছে! আমি আছি তো। জেলে গেলে আমি আগে যাব! এটা এত সহজ নয়।" তিনি এ-ও বলেন, "যিনি সরকার চালান তাঁর হাতে সব ক্ষমতা। জেলে যাওয়ার জন্য পুলিশ চাই। পুলিশ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে। পুলিশ বলবে, আমরা কাউকে খুঁজে পাইনি। আদালত কী করবে?" ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য শুনে আশ্চর্য সব মহল। আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য অপরাধ।
ভবানীপুরে ভোট প্রচারে গিয়ে ওই মন্তব্যের জন্য বিপ্লবকে নিশানা করেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা। তিনি বলেন, "ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন কোর্ট কী করবে! আমি যা করব, কোর্ট তাই-ই করবে। আমি কাউকে মানি না। একজন মুখ্যমন্ত্রী যা খুশি বলছেন! এটা এক ধরনের ধ্বংসাত্মক মনোভাব।" মমতার মতে, রায় নিয়ে আমরা আলোচনা করি। কিন্তু বিচার ব্যবস্থা নিয়ে নয়। এটা আমাদের আইনি অধিকার।" একই সঙ্গে বিপ্লবের ওই মন্তব্যের জন্য সভা থেকে কর্মীদের প্রতি তৃণমূল নেত্রীর আহ্বান, কেউ আগ্রহী হলে মানহানির মামলা করুন।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য সমগ্র জাতির জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মনে করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে তিনি লেখেন, 'ওই মন্তব্য গণতন্ত্রের প্রতি উপহাস। সুপ্রিম কোর্ট কি তাঁর মন্তব্যকে স্বীকৃতি দেয় যা আদালতের গুরুতর অসম্মানকে প্রতিফলিত করে!'