মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনখড় ফাইল চিত্র
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রচার-আন্দোলন এ বার রাজধানীতে নিয়ে আসতে চাইছে তৃণমূল। সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনার জন্য লোকসভা এবং রাজ্যসভায় যথাক্রমে স্পিকার এবং চেয়ারম্যানের কাছে প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছে তৃণমূল। সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে একদফা কথাও হয়ে গিয়েছে। সংসদীয় দলের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হবে। পাশাপাশি রাজ্যপালকে বরখাস্ত করার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তৃণমূলের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দলের দেখা করবার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মাথায় রেখে সংসদের দু’টি কক্ষ থেকে তৃণমূলের পাঁচ জনের প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চাইবেন। রাজ্যপালের কাজকর্মের বিরোধিতা করে একটি স্মারকলিপিও তাঁরা জমা দেবেন রাষ্ট্রপতিকে।
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গে প্রতিনিয়ত সংবিধান ভঙ্গ করেছেন। সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে তিন দশকের পুরনো জৈন-হাওয়ালা কাণ্ডের অভিযোগটিকেও সামনে নিয়ে এসেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই সব কিছু নিয়েই সংসদে আলোচনা চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। সূত্রের মতে, আলোচনা হলে তাঁরা দাবি তুলবেন সংবিধান-বিরোধী কাজ করার জন্য অবিলম্বে তাঁকে বরখাস্ত করা হোক।
নয়াদিল্লির রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল সংসদের দুই কক্ষে প্রস্তাব দিলেও তা কতটা গ্রাহ্য করা হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ধনখড়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতিগ্রস্ত অভিযোগটিও ধোপে টিঁকবে না তৃণমূল সেটা জানে, কারণ আদালতে কিছুই প্রমাণ হয়নি। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান অথবা লোকসভার স্পিকার তৃণমূলের নোটিসটি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করলে, তা তখনই খারিজ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূল। কিন্তু সংসদে আলোচনার সুযোগ আসুক বা না আসুক, রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতকে দিল্লির দরবারে টেনে নিয়ে যাওয়াটা রাজনৈতিক ভাবে জরুরি তৃণমূলের জন্য। পশ্চিমবঙ্গের ভোটে বড় জয় পাওয়ার পর যথেষ্ট চড়া দমেই বাদল অধিবেশন শুরু করবে তৃণমূল, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারেরও বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ যে আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বাড়বে, এমনটা আশঙ্কা করছে তৃণমূল। তাই দিল্লিতে পাল্টা ব্যাটিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। প্রয়োজনে অন্য সমমনস্ক বিরোধী দলগুলিকেও এই প্রচারে পাশে থাকার জন্য অনুরোধ করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।