ছবি সংগৃহীত।
কেউ চিন, কেউ কেউ ইউরোপ, অনেকে মিশর সফরের তোড়জোড় করছিলেন। টাকা জমা দিয়েছিলেন নামী ভ্রমণ সংস্থায়। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতায় সেই সংস্থায় ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে। ই-মেল করে জানানো হয়েছে, ‘যাত্রা বাতিল’। মহোৎসবে মাথায় হাত পড়েছে পর্যটকদের!
অনেক ভ্রমণার্থী এ দিনই শেক্সপিয়র সরণি থানায় গিয়ে ‘কক্স অ্যান্ড কিংস’ নামে সেই পর্যটন সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। ওই সংস্থার কর্মীরাও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই সব কর্মীর অভিযোগ, তাঁরা চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না।
অপরাজিতা ঘোষ নামে সল্টলেকের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ৮ অক্টোবর, দশমীর দিন ২৫ জন মিলে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। অগস্টে অগ্রিম হিসেবে মাথাপিছু ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন। যাত্রা বাতিল শুনে এ দিন সকালে লিটল রাসেল স্ট্রিটে সংস্থার দফতরে গিয়ে তাঁরা দেখেন, প্রচুর মানুষ অপেক্ষা করছেন। পরে থানায় অভিযোগ করেন অপরাজিতাদেবী। বাগুইআটির বাসিন্দা অসীমা পাল ছেলেকে নিয়ে চিন যাবেন বলে প্রায় সওয়া দু’লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। তাঁকে এ দিন ফোন করে ডেকে পাঠানো হয়। তিনিও গিয়ে দেখেন ওই হাল। তিনিও থানায় অভিযোগ করেছেন।
সংস্থার কর্মীদের তরফে আইনজীবী নীলাদ্রি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কর্মীরা এর বিন্দুবিসর্গ জানতেন না। তাঁরা বৃহস্পতিবার সকালে অফিসে গিয়ে দেখেন, ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে। নোটিস ঝুলছে। অফিস ফের কবে খুলবে, কেউ জানেন না। যাঁরা টাকা জমা দিয়েছেন, তাঁরা চড়াও হচ্ছেন কর্মীদের উপরে। কর্মীরাও পড়েছেন সঙ্কটে। তাই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন তাঁরা।’’ হঠাৎ দফতরে তালা কেন? সংস্থার একটি সূত্রের খবর, তারা মুম্বইয়ে সদর দফতরে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছে, সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় এই পরিস্থিতি।
মুম্বইয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে টমাস সিটি জানান, যে-ব্যাঙ্কে কক্স অ্যান্ড কিংসের অ্যাকাউন্ট রয়েছে, কিছু অর্থনৈতিক সমস্যার জেরে তা থেকে টাকা তোলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ফলে বিদেশে যে-পর্যটন সংস্থার সঙ্গে তাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁদের বকেয়া টাকা দেওয়া হয়নি। তাই আপাতত সব সফরই বাতিল। যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁদের টাকা সুদ-সহ ৯০ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন টমাস।