উঠে গেল অস্থায়ী পরিবহণ কর্মীদের ধর্মঘট। ফাইল চিত্র।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি)-র অস্থায়ী কর্মীদের ধর্মঘট উঠে গেল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ কথা ঘোষণা করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, পরিবহণ দফতরের আশ্বাসে উঠে যাচ্ছে অস্থায়ী পরিবহণ কর্মীদের ধর্মঘট। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে রাজ্যের বাস পরিষেবা। গত বুধবার থেকে স্থায়ীকরণ, মাসে ২৬ দিনের কাজ নিশ্চিত করা, কাজ অনুযায়ী বেতন-সহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন এসবিএসটিসির চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৩ সাল থেকে যে সব অস্থায়ী চালক বাস চালাচ্ছেন, তাঁদের স্থায়ী করা হোক এবং স্থায়ী কর্মচারীদের মতোই ছুটি ও অন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হোক। এই দাবিতেই হাওড়া, হলদিয়া, মেদিনীপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট, বাঁকুড়া,বর্ধমান, দুর্গাপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মঘট চলছে। অস্থায়ী চালকদের দাবি, উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার এ বিষয়ে জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।
মঙ্গলবার পুলিশ দিঘা ডিপোতে আন্দোলনকারীদের হঠিয়ে দেয়। আর সন্ধ্যায় উঠে যায় যাবতীয় বিক্ষোভ। সোমবারই পরিবহণ মন্ত্রী তাঁদের যাবতীয় দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও ধর্মঘট ওঠেনি। কিন্তু মঙ্গলবার সেই জট খুলে গেল। তবে পরিবহণ মন্ত্রী এই আন্দোলনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ইন্ধন থাকার অভিযোগ তুলেছেন। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রিয় পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি)-এর চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল আবার এই আন্দোলনে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু ও বিজেপির যুক্ত থাকার কথা বলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই কাজে সিপিএমের পিছন থেকে সহায়কের ভূমিকায় রয়েছে বিজেপি। সিপিএম তো এখন আবার একা চলতে পারে না! তাই পিছন থেকে বিজেপির মদত নিয়ে এই নোংরা খেলা করে রাজ্য সরকারকে বদনাম করতে চাইছে।’’
মন্ত্রীর অভিযোগের জবাবে সিটুর সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, ‘‘এই আন্দোলনে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে দিয়ে লঘু করে দেওয়া যাবে না। খেটে খাওয়া পরিবহণ কর্মীদের এই আন্দোলন তাঁদের অধিকার বুঝে নেওয়ার লড়াই। তাঁদের এই আন্দোলনে আমাদের সমর্থন রয়েছে, তা আমরা প্রকাশ্যেই জানিয়েছি। এতে লুকোনোর কিছু নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অস্থায়ী খেটে খাওয়া মানুষের আন্দোলনকে যাঁরা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র বলবেন, তাঁরা সেই আন্দোলন ও কর্মীদের ছোট করবেন।’’ ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘ঘটনাচক্রে আমি কাঁথি থেকে কলকাতায় আসি এসবিএসটিসির বাসে করেই। তাই অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে আমার ভাল পরিচয় রয়েছে। তাঁদের দাবিদাওয়ার কথাও আমরা জানি। তাঁদের কর্মজীবনের কোনও নিশ্চয়তা নেই। রাজ্যের পরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। রাজ্য সরকার এখন সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই বিরোধীদের আক্রমণ করছে।’’