TET Scam

টেটের লক্ষ লক্ষ উত্তরপত্র নষ্ট করে ফেলার পিছনে কি গভীর ষড়যন্ত্র? নতুন সন্দেহের মুখে পর্ষদ

২০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে কাদের উত্তরপত্র নষ্ট করা হয়েছে, সে সংক্রান্ত তথ্য পর্ষদের কাছে নেই। এ বিষয়ে পর্ষদের ভূমিকা সন্দেহজনক এবং ঢিলেঢালা, মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:২৫
Share:
০১ ১৫

২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ১২ লক্ষেরও বেশি উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এই পদক্ষেপের যোগ আছে কি না জানতে চায় কলকাতা হাই কোর্ট। কেন ওএমআর শিটগুলি নষ্ট করা হল, সিবিআইকে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

০২ ১৫

২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেছিলেন, পরীক্ষায় তাঁদের কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে পর্ষদের কাছে ওই খাতাগুলি দেখতে চায় আদালত। চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বলে দিলেও খাতা দেখাতে পারেনি পর্ষদ।

Advertisement
০৩ ১৫

পর্ষদের তরফে আদালতে জানানো হয়েছিল, ২০১৪ সালে প্রায় ২৩ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী টেটের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছিলেন মোট ২০ লক্ষ ৯০ হাজার প্রার্থী। এই বিপুল সংখ্যক উত্তরপত্র সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।

০৪ ১৫

পর্ষদ আরও জানিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিটগুলি ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু খাতা রেখে দেওয়া হয়নি। তা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। জায়গার অভাবেই এই কাজ করতে হয়েছে বলে জানিয়েছিল পর্ষদ।

০৫ ১৫

ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রেকগনিশন) শিট হল বহু-বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নের তালিকা। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের এই ধরনের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। প্রশ্নের নীচে বিকল্প উত্তরগুলির পাশে দেওয়া থাকে একটি করে গোল অংশ। সঠিক উত্তরের পাশের গোল শূন্যস্থান কালি দিয়ে ভরাট করে উত্তর জানান পরীক্ষার্থীরা।

০৬ ১৫

ওএমআর শিটে এক বার মাত্র উত্তর দিতে পারেন পরীক্ষার্থীরা। একই প্রশ্নের উত্তরে একাধিক শূন্যস্থান ভরাট করলে উত্তরটি বাতিল হয়ে যায়। মূল্যায়ন হয় কম্পিউটার-ভিত্তিক।

০৭ ১৫

মূলত যে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতেই ওএমআর শিটে পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করা হয়। কম্পিউটার-ভিত্তিক মূল্যায়নে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

০৮ ১৫

কিন্তু এই ধরনের উত্তরপত্রের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনেক কলকাঠি নাড়া সম্ভব বলে মনে করেছে আদালত। তাই ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংরক্ষিত উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটগুলিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিচারপতি।

০৯ ১৫

টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট নষ্ট করা হল কেন, তা খতিয়ে দেখার জন্য মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইকে এ বিষয়ে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

১০ ১৫

সিবিআই তদন্ত করে দেখবে, কার নির্দেশে, ঠিক কী ভাবে ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছিল, নষ্ট করার প্রক্রিয়ায় আইন মানা হয়েছিল কি না, ওএমআর শিট নষ্ট করার সময় পর্ষদের কোনও আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন কি না।

১১ ১৫

২০ লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ লক্ষের ওএমআর শিট নষ্ট করা হয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কাদের উত্তরপত্র নষ্ট করা হয়েছে, সে সংক্রান্ত তথ্যও পর্ষদের কাছে নেই। উত্তরপত্র নষ্ট করার জন্য কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি। সব মিলিয়ে পর্ষদের ভূমিকা সন্দেহজনক এব‌ং ঢিলেঢালা, মন্তব্য বিচারপতির। তিনি আরও বলেন, ‘‘সাংবিধানিক সংস্থার কাছে এই ভূমিকা প্রত্যাশিত নয়।’’

১২ ১৫

একই সঙ্গে ওএমআর শিট সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবারই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে বলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশ, মানিক যদি তদন্তে অসহযোগিতা করেন তা হলে সিবিআই চাইলে তাঁকে হেফাজতেও নিতে পারবে।

১৩ ১৫

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে। তাঁকে ওএমআর শিট সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রশ্ন করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

১৪ ১৫

২০১৪ সালের টেট নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সে সময়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন মানিক। তাঁর সম্মতি ছাড়া বা তাঁর অগোচরে পর্ষদের কোনও কাজ সম্ভব ছিল না। ওএমআর শিট নষ্ট করার বিষয়েও মানিকের সম্মতি ছিল বলে মনে করছে আদালত। সেই কারণেই তাঁকে জেরার নির্দেশ দেওয়া হল।

১৫ ১৫

উল্লেখ্য, চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে এই অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিল, পরীক্ষার্থীদের ওএমআর শিট পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। টেটের উত্তরপত্রে কারচুপি হয়েছে কি না, এ বার সে দিকে নজর আদালতের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement