—প্রতীকী চিত্র।
ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপ করল পরিবহণ দপ্তর। ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য স্কুল বাস এবং পুলকারের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করা হল। দফতরের তরফে ওই নির্দেশিকাটি জারি করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। বাড়ি থেকে স্কুলে যাতায়াতের জন্য অভিভাবকদের বড় অংশ তাঁদের ছেলে-মেয়েকে বাস অথবা পুলকারের চালকদের হাতেই ছেড়ে দেন। কিন্তু যাতায়াতের তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন অভিভাবকেরা। তাই বাড়তি সুরক্ষাবলয় তৈরি করার লক্ষ্যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবহণ দফতরের এক কর্তা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ স্লোগানকে সামনে রেখেই পরিকল্পনা রূপায়িত হয়েছে বলে ওই নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। নির্দেশিকায় অভিভাবকদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু পরামর্শ। তাতে বলা হয়েছে, বাড়তি সচেতন হতে হবে অভিভাবকদেরও। স্কুল বাস কিংবা পুলকারের নম্বর, গাড়ির স্বাস্থ্য, চালকের বিস্তারিত তথ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশে পরিবহণ দফতরের বার্তা, মোবাইলে পরিবহণ দফতরের অ্যাপ রাখতে হবে। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের স্কুল বাস বা পুলকারের নম্বর দিলেই সংশ্লিষ্ট গাড়ির যাবতীয় তথ্য চলে আসবে। গাড়িটি কোথায় রয়েছে, সেই তথ্য অ্যাপ মারফত পেয়ে যাবেন তারা। এই অ্যাপটি শীঘ্রই চালু করা হবে বলে জানিয়েছে পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র। স্কুল বাস মালিক এবং পুলকারের মালিকদের পরিবহণ দফতরের বিধি মেনে সমস্ত সরকারি কাগজপত্র গাড়িতে রাখার নির্দেশ স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও সব স্কুল বাস এবং পুলকারের রং নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, গাড়ির হলুদ রঙের মাঝে নীল রঙের বর্ডার দিতে হবে। সঙ্গে গাড়িতে ছাত্রছাত্রীদের দেখভালের জন্য এক জন অ্যাটেনড্যান্ট রাখা বাধ্যতামূলক। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দফতরের এমন উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য স্কুলবাস কিংবা পুলকারের উপর সরকারি নজরদারি রাখা। অভিভাবক, স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পুলকার চালক কিংবা মালিকদের মধ্যে প্রকৃত সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে অনভিপ্রেত ঘটনা এড়ানো। আগামী প্রজন্মকে সুরক্ষা দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’’
ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল শিক্ষা দফতর, পুলিশ, স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক সমিতি এবং পুলকার সংগঠনের সঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা চালিয়েছে। সব পক্ষের মতামত নিয়েই এই নির্দেশিকা প্রকাশ হয়েছে বলে দফতর সূত্রে খবর। কলকাতা শহরে দ্রুত এই নির্দেশিকা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা এই প্রয়োগ সম্পন্ন হলে এই নির্দেশিকাটি গোটা রাজ্যে কার্যকর করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পুলকার অনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, ‘‘এই নির্দেশিকা আমাদের কাছে নতুন। মরসুম শুরু হওয়ার আগে আমরা অভিভাবকদের কাছে যে আবেদনগুলি তুলে ধরি, মূলত সেই বিষয়গুলিকেই সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। গাড়িতে মহিলা অ্যাটেনড্যান্ট রাখা নিয়ে আমাদের কিছু পরামর্শ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা পরিবহণ দফতরের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা চাই।’’