প্রতীকী ছবি।
আবেদন করেও এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে যেতে অনেক সময়েই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাপিত্যেশ করে বসে থাকতে হয় দীর্ঘদিন। সেই সমস্যার মোকাবিলায় তাঁদের বদলির প্রক্রিয়া আরও সরল করল শিক্ষা দফতর।
সরলীকরণ বলতে আবেদন থেকে শুরু করে নতুন স্কুলে নিয়োগপত্র প্রাপ্তি পর্যন্ত সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় অন্তত দু’টি স্তর সাময়িক ভাবে বিলোপ করা হচ্ছে। তার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, বদলির ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির ভূমিকা আপাতত রদ। স্কুলশিক্ষা দফতর একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নতুন ব্যবস্থায় সাধারণ বদলি, আপস-বদলি, বিশেষ বদলি-সহ যাবতীয় স্থানান্তরণের ক্ষেত্রে এসএসসি এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের কোনও ভূমিকা থাকছে না। এ বার বদলির জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সরাসরি কমিশনার অব স্কুল এডুকেশনের কাছে আবেদন করতে হবে। কমিশনার অব স্কুল এডুকেশন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের আবেদন খতিয়ে দেখে গ্রহণযোগ্য মনে করলে বদলির সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেটি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে পাঠাবেন। পর্ষদ শুধু বদলির নিয়োগপত্র দেবে।
এত দিন পর্যন্ত শিক্ষকদের সমস্ত বদলির ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকত। তারাই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ও শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করত। সব মিলিয়ে প্রক্রিয়াটি অনেক সময়েই দীর্ঘ হত। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি জানান, শিক্ষকদের বদলিতে অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লাগার অভিযোগ উঠছে। তাই বদলি-প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত হয়, তার ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সেই বক্তব্যের কিছু দিনের মধ্যেই এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল শিক্ষা দফতর।
শিক্ষকদের বদলিতে এসএসসি-র ভূমিকা এ ভাবে রদ করা হচ্ছে কেন? শিক্ষা সূত্রের খবর, এসএসসি-তে এখন স্থায়ী চেয়ারম্যান নেই। তা ছাড়া শিক্ষক নিয়োগের অজস্র বকেয়া কাজ ও মামলার জন্য তাদের নানা রকম ব্যস্ততা রয়েছে। তাই শিক্ষক বদলির দায়িত্ব থেকে এসএসসি-কে আপাতত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক সংগঠনগুলি সাধারণ ভাবে বদলির এই সরলীকরণ প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানালেও মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তিতে কিছু ধোঁয়াশা আছে। ‘ভ্যাকেন্সি লিস্ট’ বা খালি পদের তালিকা অনলাইনে দেওয়া হবে কি না, বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখ নেই। তাই কোন শিক্ষক বদলির পরে কোন স্কুল পাবেন, সেই বিষয়ে অস্বচ্ছতা থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।” বদলির ক্ষেত্রে দ্রুততা নিশ্চয়ই কাম্য, তবে স্বচ্ছতাও জরুরি বলে জানান কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস।