প্রতীকী ছবি।
কিছু না কিছু কাজ করতেই হয় বন্দিদের। প্রশিক্ষণও হয় কিছু ক্ষেত্রে। এ বার বন্দিদের জন্য আবাসিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। নানা ধরনের হাতের কাজ-সহ দেওয়া হবে উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণ।
বারুইপুরের ধোপাগাছিতে কয়েক একর জমিতে প্রথম ধাপে নির্মিত হয়েছে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। পরের ধাপে তৈরি হবে বাকি অংশ। সেখানেই বন্দিদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হতে চলেছে। কেন্দ্রটি বারুইপুরে, তাই
সেখানকার বন্দিরা তো থাকবেনই। সেই সঙ্গে অন্যান্য জেলের বন্দিরা এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এ বিষয়ে কারা দফতরের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা দফতরের কর্তাদের। দু’পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিচারাধীন বন্দিদের জন্য রাজ্যে প্রথম কেন্দ্রীয় আবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি শুরু হবে বলে দাবি
প্রশাসনের একাংশের।
বারুইপুরের নতুন জেলের মধ্যে থাকা জমিতেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার কথা ভাবা হয়েছে। সেখানে বন্দিরা হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ পাবেন। প্রশিক্ষণ পর্বে সেখানকার বিশেষ পরিকাঠামোয় থাকার সুযোগ পাবেন তাঁরা। প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে যাবেন নিজের জেলে। কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু
বলেন, ‘‘কারা দফতরের এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। এটা
করা সম্ভব।’’
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, বন্দিদের এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে গেলে নিরাপত্তার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হয়। তার উপরে ভিন্ন ভিন্ন জেল থেকে বন্দিদের নিয়ে গিয়ে বারুইপুরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য রেখে দিতে হলে সরকারি পদ্ধতিতে একাধিক বিধির প্রয়োগ জরুরি। তার জন্য কারাগার-কর্তৃপক্ষের
সম্মতি ও প্রস্তুতি প্রয়োজন। কারাকর্তারা অবশ্য জানাচ্ছেন, বিষয়টি ইতিবাচক
দিকেই এগোচ্ছে। এক কারাকর্তা বলেন, ‘‘নির্মিত অংশেই এখনও সব বন্দিকে সরানো যায়নি। তাঁদের সরানোর পরে এই কাজ ধাপে ধাপে করা হবে।’’
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কী শিখবেন বন্দিরা? প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, উপার্জন হবে, এমন একশো-দেড়শো হাতের কাজেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিক্রয়যোগ্য বিভিন্ন জিনিস তৈরি, মোবাইল-সহ বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম সারাই, বিদ্যুতের বিভিন্ন কাজ শেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি প্রশিক্ষণের সময়সীমা আলাদা। তবে কোনও প্রশিক্ষণই দীর্ঘমেয়াদি হবে না। এক কর্তার কথায়, “এমন অনেক কাজ আছে, যেগুলো অনেকেই আগে থেকে জানেন। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বা শংসাপত্র নেই তাঁদের। সরকারি শংসাপত্র পেলে ভবিষ্যতে সেটা তাঁদের রুজিরোজগারের
কাজে লাগবে।” এখন সেন্ট্রাল জেলে বিভিন্ন উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। সেখানেই প্রশিক্ষণের সুযোগ পান বন্দিরা। তবে শুধু প্রশিক্ষণের জন্য একটি জেলে অন্য জেলের বন্দিদের রাখার পদক্ষেপটি বিভিন্ন মাত্রা যোগ করছে বলে প্রশাসনের
একাংশের অভিমত।