পদযাত্রা: সবুজ বাঁচানো নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিড়লা তারামণ্ডল থেকে নজরুল মঞ্চ পর্যন্ত মিছিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
পরিবেশ রক্ষায় সবুজ বাড়ানোর ডাক দিয়ে পথে নেমেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সবুজের অভিযান পদযাত্রায় পা মেলান অসংখ্য মানুষ। বেলা ৩টেয় বিড়লা প্লানেটোরিয়াম থেকে শুরু হয়ে আশুতোষ মুখার্জি রোড ধরে সাদার্ন অ্যাভিনিউ হয়ে পদযাত্রী পৌঁছয় নজরুল মঞ্চে। পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর, হাজরা, রাসবিহারী, টালিগঞ্জের কয়েকটি রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়।
পদযাত্রার জন্য গাড়ির লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে হাজরা রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, এজেসি বোস রোড-সহ কয়েকটি রাস্তায়। যানজটে দীর্ঘ সময় বাসে, মিনিবাসে বসে গরমে হাঁসফাঁস করতে দেখা যায় যাত্রীদের। যদিও পুলিশের দাবি, মিছিল যখন যে-জায়গা দিয়ে গিয়েছে, সেখানেই শুধু যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। ফলে হয়রান হওয়ার মতো কোনও যানজট হয়নি!
বাস্তব অভিজ্ঞতা অবশ্য অন্য রকম। বেলা ৩টেয় ভিক্টোরিয়ার সামনে কুইন্সওয়েতে পদযাত্রা শুরু হতেই এক্সাইড মোড়ে এজেসি রোডে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করে পুলিশ। ফলে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডে যানজট হয়ে যায়। যানজট হয় শেক্সপিয়র সরণিতেও। আশুতোষ মুখার্জি রোড ধরে পদযাত্রা যখন হাজরা মোড়, রাসবিহারী মোড় দিয়ে যায়, তখন সেই সব এলাকার রাস্তাতেও যান নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে শুরু করে হাজরা রোডে যানজট হয়। পুলিশ জানিয়েছে, টালিগঞ্জগামী সব গাড়িকে ক্যাথিড্রাল রোড, হরিশ মুখার্জি রোড, প্রতাপাদিত্য রোড দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অন্য দিকে, মধ্য কলকাতায় যানজট এড়াতে মৌলালি থেকে এক্সাইডের দিকের চলাচলকারী বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয় এসএন ব্যানার্জি রোড ধরে। সড়কের যানজট এড়াতে অনেকে মেট্রো রেল ধরে গন্তব্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। ফলে মেট্রোতেও বেড়ে যায় ভিড়।
এ দিনের পদযাত্রার বেশ কয়েকটি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা যোগ দিয়েছিলেন। গরমের দুপুরের ক্লান্তি মেটাতে রাস্তার ধারে জলের পাউচের ব্যবস্থা ছিল। দেখা যায়, অনেকেই জল খেয়ে সেই প্লাস্টিকের পাউচ রাস্তাতেই ফেলে দিচ্ছে। পরিবেশ বাঁচানোর মিছিলে রাস্তার দখল নেয় প্লাস্টিক।
পদযাত্রায় পুরো রাস্তাতেই সামনেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই দ্রুত হাঁটছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে পা মেলান তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীও। মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত গতির সঙ্গে অনেকেই পাল্লা দিতে না-পেরে পিছিয়েও পড়ছিলেন কেউ কেউ। প্রায় দেড় ঘণ্টা হেঁটে বিকেল সওয়া ৪টে নাগাদ পদযাত্রা যখন শেষ হয়, তখনও মুখ্যমন্ত্রীর চোখেমুখে ক্লান্তির বিশেষ চিহ্ন ছিল না। তিনি ঢুকে যান নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে।