Calcutta High Court

আইন মেনেই আইনজীবীর লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত, দাবি ট্র্যাফিক গার্ডের, সিসিটিভি ফুটেজ রাখার নির্দেশ কোর্টের

আদালত জানায়, ওই ট্রাফিক পুলিশ যাতে কোনও তথ্যপ্রমাণ বিকৃত করতে না পারেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় সব নথি সংরক্ষিত রাখবেন ডিসি ট্রাফিক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ২২:০৬
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।

ট্রাফিক আইন মেনেই আইনজীবীর লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ওই আইনজীবীর গাড়ির গতি বেশি ছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে এমনটাই জানালেন ট্রাফিক গার্ড পলাশ হালদার। যদিও ওই দাবি অস্বীকার করেন আইনজীবী শুভ্রাংশু পাণ্ডা। অন্য আইনজীবীরাও ওই ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে সরব হন। তাঁরাও একই রকম ভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন।

Advertisement

বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত সিসিটিভি ফুটেজ-সহ সমস্ত তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশ দেন কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিককে। আদালত জানায়, ওই ট্রাফিক পুলিশ যাতে কোনও তথ্যপ্রমাণ বিকৃত করতে না পারেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় সব নথি সংরক্ষিত রাখবেন ডিসি ট্রাফিক। ওই সব তথ্য ট্রাফিক গার্ড কোনও ভাবেই যাতে না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। ওই ঘটনায় কোনও তদন্ত চললে, তা-ও স্থগিত থাকবে। পরবর্তী শুনানির দিন অন্য আইনজীবীরাও নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারবেন। আগামী ২৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

মঙ্গলবার হাই কোর্টে হলফনামা দিয়ে ওই ট্রাফিক গার্ড জানান, গতিবেগ নির্ণয় যন্ত্র (স্পিডো মিটার)-এ ধরা পড়েছিল যে, ওই আইনজীবী অতিরিক্ত বেগে গাড়ি চালিয়েছিলেন। সে কারণেই তাঁকে আটকানো হয়। ট্রাফিক আইন মেনেই লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পরে তা ফেরতও দেওয়া হয়। পাল্টা ওই আইনজীবীর দাবি, ট্রাফিক গার্ডের দাবির কোনও সারবত্তা নেই। আইন মেনে কাজ করেননি ওই ট্রাফিক পুলিশ। তিনি বিচারপতির নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন।

Advertisement

ওই আইনজীবী ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা নিয়ে সওয়াল, পাল্টা সওয়াল হয়। আদালত জানায়, দু’সপ্তাহের মধ্যে দু’পক্ষকে হলফনামা আদানপ্রদান করতে হবে। তার পরেই এই মামলা শুনবে আদালত।

হাই কোর্টের এক বিচারপতির নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পলাশের বিরুদ্ধে। আইনজীবীর কাছ থেকে তিনি টাকা চেয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ট্র্যাফিক গার্ডকে হাই কোর্টে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। অভিযোগ ছিল, গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় হাই কোর্টের আইনজীবী শুভ্রাংশুর কাছে এক হাজার টাকা দাবি করেন পলাশ। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আইনজীবীর ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করার হুমকি দেন তিনি। আইনজীবী জানান, এ ভাবে টাকা নেওয়া যায় না। দীপঙ্কর দত্ত বনাম রাজ্য সরকারের মামলার রায় ওই ট্র্যাফিক কর্মীকে দেখানো হয়। বিচারপতি দত্ত বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত। ওই আইনজীবীর অভিযোগ, পুলিশকর্মী পাল্টা দাবি করেন, কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন। আইন শেখানোর দরকার নেই। আইন ভাল করেই জানেন। তাঁর অনেক ক্ষমতা রয়েছে। প্রসঙ্গত, বিচারপতি সমাদ্দার বর্তমানে সিকিম হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। দীর্ঘ বাগ্‌বিতণ্ডার পরে ওই পুলিশকর্মী আইনজীবীর লাইসেন্স কেড়ে নেন বলে অভিযোগ। বিচারপতি সিংহের নির্দেশে মঙ্গলবার হাই কোর্টে হাজিরা দেন ট্র্যাফিক গার্ড। তার পরেই বিচারপতি সেনগুপ্ত সিসিটিভি ফুটেজ-সহ সমস্ত তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশ দেন কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিককে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement