হোটেলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহের শুরু হোটেল এবং লজগুলি খুললেও চিন্তা কাটছিল না মুকুটমণিপুরের। আতঙ্ক কাটিয়ে পর্যটকেরা কতটা আসবেন, সেই ভাবনা ছিলই। সপ্তাহ শেষে, শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর থেকে একই পরিবারের তেরো জনের একটি পর্যটক দল বেড়াতে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে হোটেল মালিক সমিতির সূত্রে। সরকারি নিয়ম এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাঁদের চারটি ঘরে রাখা হয়েছে। বন্দোবস্তে খুশি ওই পর্যটকেরাও। তাঁরা জানিয়েছেন, এক দিনের জন্যই বেড়াতে এসেছিলেন। আজ, রবিবার তাঁদের ফেরার কথা।
‘মুকুটমণিপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সুদীপ সাহু এবং সহ-সভাপতি সঞ্জীব দত্ত জানান, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ওই পর্যটনকেন্দ্রে প্রায় ১৫টি লজ রয়েছে। করোনা-পরিস্থিতির জন্য ২৪ মার্চ থেকে সেগুলি বন্ধ ছিল। ‘আনলক ১’ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সরকারি নির্দেশ পেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লজগুলি খোলা হয় ৮ জুন থেকে। ১০ জুন পর্যটনকেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে জীবাণুনাশক ছেটানো হয়। খোলার পর থেকে অনেকেই ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। কিন্তু আসেননি। সুদীপবাবুরা বলেন, ‘‘লকডাউনের পরে প্রথম পর্যটক দেখা গেল। লজ মালিকেরা বেজায় খুশি।’’
যে বেসরকারি লজে পর্যটকেরা উঠেছেন, সেটির ম্যানেজার সৌমেন চক্রবর্তী জানান, ‘থার্মাল স্ক্যানার’ দিয়ে অতিথিদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখা হয়েছে। তার পরে তাঁদের ব্যাগপত্রে জীবাণুনাশক ‘স্প্রে’ করে জীবাণমুক্ত করা হয়। ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’ বা ‘হ্যান্ড ওয়াশ’ দিয়ে হাত পরিষ্কার করিয়ে তার পরে দেওয়া হয়েছে ঘরের চাবি। খাবার পরে চেয়ার-টেবিল একপ্রস্ত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।
পর্যটকদের মধ্যে ঝুম্পা মণ্ডল, অপরাজিতা মণ্ডলরা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন লকডাউন বাড়িতে থেকে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছিল। একঘেয়েমি কাটানোর জন্য মুকুটমণিপুরে এলাম।’’ করোনা-মোকাবিলার জন্য যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন ওই পর্যটকেরা।
মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্যদের ভাইস চেয়ারপার্সন তথা রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘‘লকডাউনের পরে বাইরে থেকে যে পর্যটকেরা আসছেন, সামাজিক দূরত্ব মেনে থাকার ক্ষেত্রে তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই বিষয়টিও লজের মালিকদের দেখতে বলা হয়েছে।’’