নিরাপত্তারক্ষীদের ব্যারিকেড সরিয়ে ঢুকে পড়ছেন পর্যটকেরা। শনিবার পৌষমেলায়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ ছিল এ বার পৌষমেলা হবে চার দিনের। পরের ৪৮ ঘন্টা সময় দেওয়া হবে মেলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য। সেই কাজ করতে গিয়ে শনিবার দিনভর গোলমাল বাধল মেলা প্রাঙ্গণে। দেদার চলল বেচাকেনা।
চার দিনের সময়সীমা মানলে মেলা শেষ হয়েছে শুক্রবার। আজ, শনিবার মেলায় পর্যটকেরা যাতে ঢুকে কেনাকাটা করতে না-পারেন, তার জন্য মেলার প্রথম দু’টি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় দফরের সামনে দিয়েও যাতে কেউ আসতে না-পারেন, সে জন্য দিল্লি থাকা আসা প্রাক্তন সেনাকর্মীদের বাহিনী ব্যারিকেড করে রাখে। সেই ব্যারিকেড হটিয়ে দিয়েই এ দিন জনতার ঢল নামে পৌষমেলায়।
অশান্তির এখানেই শেষ নয়। এ দিন বেলা ১১ টা নাগাদ বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং মেলা কমিটির সদস্যেরা মেলা মাঠে বসে থাকা দোকানদারদের উঠে যাওয়ার আর্জি জানাতে থাকেন। কিছু ব্যবসায়ী দোকানের ঝাঁপ ফেলতেও শুরু করেন। কিন্তু, মেলা মাঠে শাল পট্টির কাছে যেতেই উপাচার্যকে ঘিরে বিক্ষোভ এবং ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করে ব্যবসায়ী সমিতির একাংশ। পরিস্থিতি বুঝে সেখান থেকে চলে যান মেলা কমিটির সদস্যরা। আবার যে ব্যবসায়ীরা বিক্রিবাটা শুরু করে দেন।
আরও পড়ুন: গো-ব্যাক শুনলেন উপাচার্য
দুপুরের পর থেকে মেলায় ভিড় বাড়তে থাকে। একটা সময় বোলপুর ও শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিকের ব্যবস্থা করতে হয় জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু, মেলা মাঠে বিভিন্ন স্টলে জল ও আলোর পরিষেবা বন্ধ করে দেয় মেলা কমিটি। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিলেন, দু’দিনের ভাঙা মেলা হবে। তা সত্ত্বেও অমানবিক ভাবে আজ বিভিন্ন স্টলে জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দোকান তুলে দিতে আসায় আমরা প্রতিরোধ করেছি।’’ বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, চার দিনের পৌষমেলা হবে এবং মেলা ওঠানোর জন্য আরও দু’দিন সময় দেওয়া হবে। এর পরেও যদি ব্যবসায়ী বন্ধুরা দোকান তুলে না নেন এবং যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যায়, তার জন্য দায়ী থাকবে ব্যবসায়ী সমিতি।’’