ফাইল চিত্র।
সময়ের সঙ্গে বদলায় মানুষের পছন্দ। তাল মিলিয়ে নীতির বদল ঘটে সরকারি স্তরে। রাজ্যের ঔপনিবেশিক ইতিহাসও এখন পর্যটন মানচিত্রে নতুন করে সংযোজিত হতে চলেছে। রাজ্যের ‘হেরিটেজ’ বা ঐতিহ্যবাহী সাক্ষ্যগুলিকে নিয়ে পর্যটন সার্কিট তৈরি করতে চাইছে সরকার। এবং এই নতুন উদ্যোগের সূত্রপাত হতে চলেছে হুগলির চন্দননগরের হাত ধরে।
কলকাতায় নিযুক্ত ফরাসি কনসাল জেনারেল ভির্জিনি কোর্তভালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফে বৃহস্পতিবার ‘মউ’ বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেন রাজ্যের পর্যটনসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। স্থির হয়েছে, এক সময়ের ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরের হেরিটেজ স্থাপত্য সংরক্ষণে যৌথ ভাবে কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ ও ফরাসি সরকার। চন্দননগরের হেরিটেজ ভবন হিসেবে পরিচিত রেজিস্ট্রি বিল্ডিং সংস্কার করা হবে। হেরিটেজ সাক্ষ্য ধরে রেখে তাকে একটি ‘বুটিক’ হোটেলে পরিণত করবে সরকার। ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে। এই প্রকল্পে রাজ্য প্রাথমিক ভাবে তিন কোটি টাকা খরচ করবে। বিশেষজ্ঞ দিয়ে সহযোগিতা করবে ফরাসি সরকার। ২০১৯ সালে এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ফ্রান্সের মধ্যে মউ স্বাক্ষর হলেও কোভিড অতিমারির কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। এ বার তাই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে দু’পক্ষ।
ভির্জিনি বলেন, “এখানে আমার কার্যকাল শেষ হওয়ার আগে সমঝোতার প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দিক থেকে চন্দননগর খুব গুরুত্বপূর্ণ।” নন্দিনীর কথায়, “রাজ্যে পর্যটন হাবের সুযোগ রয়েছে। চন্দননগরে ৯৯টি হেরিটেজ বাড়ি চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলি সংরক্ষণের পরিকল্পনা চলছে। চন্দননগর পুরসভা বাকি কাজ করবে। সেখানকার স্থাপত্য-সংস্কৃতি নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ আছে।”
রাজ্যের যেখানেই হেরিটেজ ও ঐতিহাসিক সাক্ষ্য আছে, এ ভাবেই সেগুলিকে পর্যটন সার্কিটের আওতায় আনার পরিকল্পনা চলছে সরকারি স্তরে। হুগলি নদীর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা দেখানোর জন্য গঙ্গাবক্ষে পর্যটনেরও প্রস্তুতি চালাচ্ছে পর্যটন দফতর। এর আগে রাজ্যের ভিতরের স্থানীয় পর্যটনের উন্নয়নকে হাতিয়ার করেছে সরকার। হেরিটেজের পাশাপাশি ধর্মীয় পর্যটন সার্কিট নিয়েও পৃথক নীতি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পুরো পরিকল্পনা সম্পূর্ণ হলে পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গলের সঙ্গে হেরিটেজ এবং ধর্মীয় সার্কিট রাজ্যের পর্যটন হাবের অংশ হবে।