বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ফাইল চিত্র।
জমি বিতর্কে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পর অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশানা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একটি বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখেছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন।’ সেই মন্তব্যেরই পাল্টা বিবৃতি দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বভারতীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে বিবৃতি প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেই বিবৃতির নীচে স্বাক্ষর রয়েছে টিএমসিপির সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক বিজ্ঞপ্তিটিতে সমস্ত রাজ্যবাসীকে অপমান করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিটির ভাষা কদর্য এবং স্ববিরোধী। একাধিক বিষয়ে অনধিকার চর্চা করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিটিতে। এটিই প্রমাণ করে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা প্রতিটি অভিযোগ সঠিক।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণের ব্যাপারে লেখা হয়েছে, ‘‘নিজেদের অন্যায় আড়াল করতে জননেত্রীকে আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’’ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই আচরণের নিন্দা জানিয়ে উপাচার্যকে ক্ষমাও চাইতে বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর উদ্দেশে লেখা হয়েছে, ‘‘উপাচার্যের উচিৎ জিহ্বা ব্যবহার করে খাদ্য ভক্ষণ করা। ‘মাগদর্শকের’ পদহেলন নয়।’’
বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কের মধ্যেই বীরভূম সফরে এসে গত সোমবার অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে তাঁর বাড়িতেই দেখা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি সংক্রান্ত কাগজপত্র অমর্ত্যর হাতে তুলে দিয়ে এসেছিলেন মমতা। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার বার্তা দেন মমতা। সেখানকার সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়া, কয়েক জন অধ্যাপক ও আশ্রমিক দেখাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। মমতা বলেছিলেন, ‘‘যদি কেউ মনে করেন, পড়ুয়া-অধ্যাপক ও কর্মচারিবৃন্দকে ক্ষমতার জোরে মেরুকরণ, গৈরিকীকরণ করবার জন্য তাঁদের বুলডোজ় করবেন, তা হলে একটা লোকও যদি ওঁদের সঙ্গে না-থাকে আমি আছি।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরেই বুধবার বিবৃতি প্রকাশ করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতী সম্পর্কে মমতার মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও লেখা হয়েছিল। তার পরেই বিশ্বভারতীকে কটাক্ষ করে নিজেদের বিবৃতি দিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।