মহুয়ার থেকে দূরত্বই রাখছে তৃণমূল। — ফাইল চিত্র।
দলের বাইরে ‘চাপ’ বেড়েই চলেছে। এ বার দলের ভিতরেও কি চাপে পড়ে গেলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র? ‘অর্থ এবং উপহারের বিনিময়ে’ দুবাইয়ের ব্যবসায়ীর স্বার্থ দেখে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ ওঠার পর থেকেই দূরত্ব রেখেছে তৃণমূল। সেই অভিযোগ আরও জোরালো হয়ে উঠেছে বৃহস্পতিবার দুবাইকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানি স্বাক্ষরিত ‘হলফনামা’য় মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং তাঁর যোগাযোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। এর পরে তৃণমূলের পক্ষে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, দল এই বিষয়ের মধ্যে ঢুকবে না। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মহুয়ার বিষয়ে তৃণমূলের কোনও বক্তব্য নেই। দল এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাবে না।’’
এই বিতর্কের শুরু থেকেই তৃণমূল সতর্ক ভাবে পা ফেলেছে। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। দুর্গাপুজোর উদ্বোধন উপলক্ষে গত কয়েক দিন বারবারই ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন তিনি। তবে একটি বারের জন্যও মহুয়া প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও কোনও মন্তব্য করেননি। এতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল দূরত্ব বজায় রাখার পথই নিচ্ছে। তবে এ বার স্পষ্ট করেই কুণাল তা জানিয়ে দিলেন।
প্রসঙ্গত, মহুয়ার বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লেখেন গত রবিবার। এর পরে তৃণমূলের তরফে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। জয় অনন্ত দেহাদ্রাই নামে যে আইনজীবী মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই এবং বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তকে চিঠি লিখেছিলেন, তিনি মহুয়ার এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে জানা গিয়েছে। মহুয়াই পরে জানান, বন্ধুত্বে বিচ্ছেদের পর থেকেই তিনি মহুয়াকে হুমকি দিচ্ছিলেন। কুকুর চুরি করে নেওয়ার অভিযোগও করেন। মহুয়া মানহানির মামলা করা-সহ বার বার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে নিজের মতামত জানিয়েছেন।
প্রথম থেকেই দল যে পাশে থাকবে না, সেটা বুঝে মহুয়া নিজের লড়াই হিসাবেই নিয়েছেন বিষয়টিকে। এ বার প্রকাশ্যে এসে গেল যে, মহুয়ার পাশে নেই দল। শুক্রবারও মহুয়া নিজের থেকেই জানিয়ে দিয়েছেন, সিবিআই তলব করলে তিনি যেতে রাজি। ইতিমধ্যেই এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এথিক্স কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার মহুয়া জানিয়েছেন, এথিক্স কমিটি ডাকলে তিনি সাড়া দেবেন। তার আগে সংবাদমাধ্যমকে তিনি কিছু বলবেন না।