(বাঁ দিকে) মহুয়া মৈত্র। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —পিটিআই।
সোমবার তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কার করার সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট জমা পড়ার কথা ছিল লোকসভায়। যদিও অধিবেশনের প্রথমার্ধ্বে তা জমা পড়েনি। তার মধ্যেই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়ালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পাশাপাশিই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, মহুয়ার লড়াই তাঁকে নিজেকেই লড়তে হবে। প্রসঙ্গত, মহুয়া প্রসঙ্গে অভিষেক প্রথম যখন মুখ খুলেছিলেন, তখনও তিনি একই অবস্থানে ছিলেন।
মহুয়ার প্রসঙ্গে অভিষেক নিজের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। তাঁকে কী ভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে, তা-ও উল্লেখ করেছেন তিনি। অভিষেকের কথায়, ‘‘মহুয়া মৈত্র নিজের লড়াই নিজেই লড়তে পারেন। তিনি স্বাবলম্বী। দল অবশ্যই তাঁর পাশে থাকবে।’’ এর পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘চার বছর ধরে আমাকেও নিজের লড়াই নিজেকেই লড়তে হচ্ছে। আমি ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আমার লড়াই আমি একাই লড়ছি।’’ গত কয়েক বছরে তিনি এবং তাঁর স্ত্রীকে মোট ১২ বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ডেকে পাঠিয়েছে জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী-সন্তানদেরও তো ছাড়ছে না!’’
গত ১৫ অক্টোবর তৃণমূল সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘ঘুষ ও উপহারের বিনিময়ে প্রশ্ন’ করার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ করেছিলেন বিজেপির সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাই। মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে ‘ঘুষ’ নিয়ে সংসদে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। সেই প্রশ্নে মহুয়া আদানির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার এথিক্স কমিটি তদন্ত করে। তার পরে কমিটি স্পিকারের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছে, মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করা হোক। গোড়ার দিকে অবশ্য তৃণমূল দলগত ভাবে মহুয়ার পাশে দাঁড়ায়নি। কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাঁর লড়াই একাই লড়তে শুরু করেছিলেন। তার পরে শুধু দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক নন, মহুয়া পাশে পেয়েছেন অধীর চৌধুরী, মহম্মদ সেলিম, সীতারাম ইয়েচুরির মতো কংগ্রেস এবং সিপিএমের শীর্ষনেতাদেরও। অনেকের মতে, মহুয়াকে শেষ পর্যন্ত বহিষ্কার করা হলে তৃণমূল সাংসদ আদালতে যেতে পারেন। অভিষেকের কথায় এটা স্পষ্ট যে, মহুয়ার সেই লড়াইয়ে দলগত ভাবে তৃণমূল তাঁর পাশে থাকবে। অভিষেক সোমবারেও বলেছেন, ‘‘বিজেপির উদ্দেশ্য মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা।’’ যেমন মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতাও বলেছিলেন, ‘‘ওরা এখন মহুয়াকে তাড়াতে চাইছে। পাগল না হলে ভোটের তিন মাস আগে এই কাজ কেউ করে?’’