হুমায়ুন কবীর। নিজস্ব চিত্র
ফের রাজনৈতিক রং বদলাচ্ছেন হুমায়ুন কবীর। তাঁর হবু রাজনৈতিক দল তৃণমূল। বছর চারেক আগে যে দলে মন্ত্রিত্ব কালে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তিনি।
আগামী ৬ অগস্ট তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কাছ থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে ফের তৃণমূলে ফিরবেন তিনি। রবিবার হুমায়ুন বলেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে ভুল করেছিলাম। পুরনো দলেই ফিরছি। যত দিন রাজনীতি করব, দিদিই আমার নেত্রী। তাঁর কথা মতোই কাজ করব।’’ তৃণমূলের অন্দরের খবর, ৩ অগস্ট সোমবার, তাঁর দলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তবে বিশেষ কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছে। ৬ অগস্ট দুপুরে বহরমপুরে জেলা দফতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দলের সভা। হুমায়ুনের কথায়, ‘‘ওই সভায় আমার বেশ কিছু অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেব।’’ দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, ‘‘ভুল শুধরে হুমায়ুন দলে ফিরতে চাইছেন। ওঁকে স্বাগত।’’
দলবদল অবশ্য হুমায়ুনের নতুন ঘটনা নয়। কংগ্রেস থেকে তৃণমূল ছুঁয়ে বিজেপি ঘুরে ফের তিনি তৃণমূলের পথে। কংগ্রেসের টিকিটে জিতে হুমাযুন কবীর জেলা পরিষদের সদস্য হয়েছিলেন। একদা কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদে অধীর চৌধুরীর দক্ষিণহস্ত ছিলেন হুমায়ুন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কংগ্রেসের টিকিটেই রেজিনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথম বার জয়ী হন তিনি। কিন্তু বছর ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে অধীরের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে তাঁর প্রথম বার দল বদল। ২০১২ সালে ২০ নভেম্বর দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে পাড়ি দেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্ত্রিত্ব পেতেও দেরি হয়নি তাঁর। কিন্তু দলের মুর্শিদাবাদ জেলা পরিদর্শক শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিবাদের জেরে ২০১৫ সালে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। পরের বছরই নির্দল প্রার্থী হয়ে টেবিল চিহ্নে রেজিনগর কেন্দ্রে প্রার্থী হন হুমায়ুন। মাত্র তিন হাজার ভোটে কংগ্রেস প্রার্থীর কাছে হেরে গেলেও এলাকায় তাঁর প্রতিপত্তিতে ভাঁটা পড়েনি। সে বার, বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী রবিউল ইসলাম চৌধুরী ৭৯ হাজার ভোট পেয়ে জিতলেও হুমায়ুন পেয়েছিলেন ৭৪ হাজারেরও বেশি ভোট। তৃণমূল প্রার্থী পান ১৪ হাজার ভোট। সে বছরই সেপ্টেম্বরে তাঁর পুরনো রাজনৈতিক ‘গুরু’ অধীর চৌধুরীর প্রস্তাবে ফের কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তন। ২০১৮ সালে কংগ্রেসের হয়ে প্রবল দাপটে পঞ্চায়েত ভোট করান তিনি। সেই প্রত্যাবর্তনও স্থায়ী হয়নি। ২০১৮ সালে দিল্লি গিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে কৈলাস বিজয়বর্গীয় হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। পরে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে বিজেপি-র প্রার্থীও হন। কিন্তু পরের বছর, এনআরসি নিয়ে আন্দোলনের জেরে বিজেপি-র সঙ্গে মত পার্থক্যের শুরু। আর তার জেরেই দল ছেড়ে দেন হুমায়ুন।