চলতি সপ্তাহেই শীতকালীন অধিবেশনের শেষ ভাগে পশ্চিমবঙ্গের পাওনাগণ্ডা না মেটানোর প্রতিবাদে সংসদে সরব হবে তৃণমূল। ফাইল চিত্র।
আগামী শুক্রবারই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই হাতে থাকা এই পাঁচ দিনে সংসদে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে চেপে ধরার জন্য তৈরি হচ্ছে তৃণমূল। চলতি সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গের পাওনাগণ্ডা না মেটানোর প্রতিবাদে সংসদে সরব হওয়ার পাশাপাশি, সংসদের গাঁধী মূর্তির সামনে ধর্নাও দিতে পারেন তৃণমূল সাংসদরা। বড়দিনের উৎসব উপলক্ষে দু’দিন ছুটি দিয়ে সংসদ চালানোর পক্ষপাতী ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বিরোধী দলগুলি সম্মতি না দেওয়ায় পিছু হটতে হয়েছে কেন্দ্রকে। তাই মনে করা হচ্ছে আগামী শুক্রবারই শেষ হতে পারে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। সংসদের এই অধিবেশনে এখনও সম্মিলিত ভাবে বিরোধীরা মোদী সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে পারেনি বলেই মত একাংশের।
কিন্তু নিজেদের দাবিদাওয়া আদায় প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে যেতে প্রস্তুত তৃণমূল। কারণ শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতা সফরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে রাজ্যের বকেয়া পাওনা প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন। এমনকি ১০০ দিনের কাজের টাকার পাওনা নিয়েও চিঠি দিয়েছেন শাহকে। এই আলোচনার পাশাপাশি, সংসদে দলের সাংসদদের দিয়েও মমতা রাজ্যের দাবি আদায়ের কৌশল নিয়েছেন বলেই জানাচ্ছেন তৃণমূলের এক সাংসদ।
এ ক্ষেত্রে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য ১০০ দিনের কাজের টাকা গত এক বছর ধরে আটকে রয়েছে কেন্দ্রে। সম্প্রতি রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছিলেন। সেখানেও রাজ্যের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গেই গিরিরাজের কাছে সরব হয়েছিলেন প্রদীপ। তাতে প্রথম পর্যায়ে গ্রামীণ সড়ক ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির অর্থ মিলেছে মাত্র। কিন্তু রাজ্যের দাবি, এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের এমন অনেক প্রকল্প রয়েছে, যার টাকা কেন্দ্র ঠিকমতো দিচ্ছে না রাজ্য সরকারকে। তাই সংসদেও বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়া জরুরি বলেই মনে করছেন তৃণমূল সাংসদরা।
অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে তৃণমূলের এমন আক্রমণমুখী হয়ে ওঠার আরও একটি কারণ রয়েছে। সোমবার রাতেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি নিয়ে বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার দিল্লিতে দেখা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। এ ছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ উন্নয়নে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজের সঙ্গে কথা বলবেন বিরোধী দলনেতা এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাই পাল্টা চাপের কৌশল নিতেও সংসদ অধিবেশনের শেষ পর্যায়ে রাজ্যের দাবিগুলিকে সামনে রেখে সংসদে সুর চড়াতে পারেন তৃণমূল সাংসদরা।