ছবি: সংগৃহীত।
‘বাংলার গর্ব মমতা’—তৃণমূলের এই স্লোগান নিয়ে তরজা শুরু হয়ে গেল রাজ্যের শাসক ও বিরোধীদের। আজ শনিবার থেকে গোটা রাজ্যে শাসক তৃণমূল এই কর্মসূচিতে নেমে পড়ছে। পাশাপাশি তাদের এই কর্মসূচিকে আক্রমণ করে পাল্টা প্রচারে নামল কংগ্রেস এবং বামেরাও।
জনসংযোগের লক্ষ্যে আজ রাজ্যের সব বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন হবে। তারপর আড়াই মাস ধরে নানা ভাগে এই কর্মসূচি চলবে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘বাংলার গরিমা, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির ধারক হিসেবে মমতা বন্দ্যোরপাধ্যায়কে সামনে রেখেই এই কর্মসূচি সাজা হয়েছে। গ্রাম-শহর সর্বত্র দলের প্রত্যেকে এই কর্মসূচিতে সামিল হবেন।’’
তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে অবশ্য বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে অসম্মান করার কর্মসূচি হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আগে হোর্ডিংয়ে নিজেরাই তৃণমূল নেত্রীকে ‘সততার প্রতীক’ বলে দেখাতেন। সেই হোর্ডিং এখন কোথায় গেল? সারদা, নারদের পরে আর দেখা যায় না! এ বার কর্পোরেট কায়দায় কয়েকশো কোটি টাকা খরচা করে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ লেখা ফ্লেক্স-হোর্ডিংয়ে সব দেওয়াল, ল্যাম্পপোস্ট ভরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলার গর্ব বলতে বাংলার মানুষ বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, নেতাজিকে বোঝেন। তাঁদের সকলকে অসম্মান করে এমন প্রচার যিনি করছেন, তিনি বাংলার গর্ব নন, তিনি আসলে বাংলার সঙ্কট!’’
আরও পড়ুন: করোনা! রং থাক চেনা বৃত্তে
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কংগ্রেসের যে নেতা ‘ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া ইজ ইন্দিরা’ বলে মন্তব্য করে প্রচারে এসেছিলেন, ইন্দিরা গাঁধী নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরে সেই নেতাই আগে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন! মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই, এজেন্সি ভাড়া করে চাটুকারিতা থেকে সাবধানে থাকুন! বাংলার প্রকৃত গর্বদের অসম্মান করা বন্ধ করুন।’’
তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের এই মতকে হতাশার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে চিহ্নত করেছে। পার্থবাবু বলেন, ‘‘এই সময়ের প্রেক্ষাপটে দেশের সংবিধান, সামাজিক ন্যায় ও দুর্বল মানুষের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা বাংলার মানুষ জানেন। যাঁরা জানেন না, তাঁদের তা বুঝতে হবে।’’
দলের এই কর্মসূচির শুরুতে প্রতি বুথের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিধানসভা ভিত্তিক বৈঠক হবে। তাতে গোটা রাজ্যে দলের প্রায় ৭৫ হাজার কর্মীকে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।