তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক মাসব্যাপী কর্মসূচি রাখা হয়েছে দলের তরফে। ফাইল চিত্র।
সব ঠিকঠাক চললে আগামী ২ জানুয়ারি বড়সড় কর্মসূচি ঘোষণা করতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কর্মসূচি হতে চলেছে অনেকটাই তৃণমূলকে সাফল্য এনে দেওয়া কর্মসূচি ‘দিদিকে বলো’র মতো। নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের ২ তারিখে দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। যে বৈঠকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে তৃণমূলের সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়ক, জেলা সভাপতি, পুরসভার মেয়র, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়র পারিষদ, দলের শাখা সংগঠনের প্রধান-সহ অন্য পদাধিকারীদের। সেই বৈঠকেই নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা করবেন তৃণমূল নেত্রী। ঘোষিত এই কর্মসূচিতে আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যের ৩ হাজার ৩০০ গ্রামে রাত্রিযাপন করবেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। সেই দলে থাকবেন সাংসদ, বিধায়ক ও তৃণমূলের নেতারা। আগামী পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি হিসাবে এই বিশেষ কর্মসূচি দলের তরফে নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জমি তৈরিতেও সহায়ক হবে বলেও দাবি করেছেন এক তৃণমূল নেতা। তৃণমূলের তরফে এই কর্মসূচির ঘোষণা করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এ ছাড়াও ওই বৈঠকে থাকতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী প্রমুখ। নতুন এই কর্মসূচির কী নাম হবে, তা এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি।
আপাতত এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ৩০০ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে একটি বিশেষ প্রতিনিধিদল। জানুয়ারি মাসে ১০ দিন ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১০ দিন করে চলবে এই কর্মসূচি। বিভিন্ন গ্রামে আলাদা করে এই রাত্রিযাপন করবেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। ১০ দিন করে এই কর্মসূচি রাখার কারণ, তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক মাসব্যাপী কর্মসূচি রাখা হয়েছে দলের তরফে। তা ছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদ ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে যোগ দেবেন দলের সাংসদ, বিধায়করা। এই কর্মসূচি ১০ দিন চলবে, এমনটাই ঠিক করা হয়েছে।
পরবর্তী সময় এই কর্মসূচির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। এই কর্মসূচির মাধ্যমেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রতিনিধি খুঁজে বার করার কাজ চলবে বলেও জানানো হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাকে টিকিট দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে এই কর্মসূচির মাধ্যমেই। সম্প্রতি ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচি নিয়েও গ্রামে গ্রামে গিয়েছেন তৃণমূলের নেত্রীরা। কিন্তু এ বারের কর্মসূচি তার থেকে অনেক বৃহৎ।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পর নিজেদের পরামর্শদাতা হিসাবে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করে তৃণমূল। ওই বছরেই ২৯ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চ থেকে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন মমতা। সেই কর্মসূচিতে একটি হেল্পলাইন নম্বর চালুর পাশাপাশি, নেতাদের শহর, শহরতলি, গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা, থাকা এবং রাত্রিযাপন করতে বলা হয়েছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে তৃণমূল। আরও অনেক বিষয়ের সঙ্গে সেই জয়ে এই কর্মসূচির প্রভাব ছিল বলেই মনে করা হয়। এ বার ভোটকুশলী প্রশান্ত না থাকলেও নিজ উদ্যোগেই একই ধাঁচের কর্মসূচি ঘোষণা করতে চলেছেন মমতা-অভিষেক।