Paschimbanga Diwas

পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করে ‘বাংলা অস্মিতা’ জাগাতে হবে, দলকে লিখিত নির্দেশ সভাপতি সুব্রতর

সাতটি নির্দেশের পঞ্চমটিতে সুব্রত বক্সী বলেছেন, ‘‘স্থানীয় ছোটদের, বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের এইসব অনুষ্ঠানে সংযুক্ত করে ‘‘বাংলা অস্মিতা’’- চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ২২:০৪
Share:

পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করে ‘বাংলা অস্মিতা’ উদ্বুদ্ধ করতে নির্দেশ সুব্রত বক্সীর। —ফাইল চিত্র।

পয়লা বৈশাখ রাজ্য জুড়ে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করে ‘বাংলা অস্মিতা’-কে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্বকে এমনটাই নির্দেশ দিলেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দলের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের উদ্দেশে লিখিত নির্দেশ পাঠিয়ে ওই দিনটি পালন করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি মূলত তিনি পাঠিয়েছেন, জেলা সভাপতি, জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান, সাংসদ, বিধায়ক এবং শাখা সংগঠনের প্রধানদের। মূলত সাতটি নির্দেশের কথা উল্লেখ করে এই নির্দেশিকাটি জারি করা হয়েছে।

Advertisement

সাতটি নির্দেশের পঞ্চমটিতে বলা হয়েছে, ‘‘স্থানীয় ছোটদের, বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের এই সব অনুষ্ঠানে সংযুক্ত করে ‘বাংলা অস্মিতা’ চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, এই নির্দেশেই আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের অঙ্ক দেখছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। কারণ, এ বছরের শুরু থেকেই বিজেপিকে আবারও ‘বহিরাগত’দের দল বলে আক্রমণ শুরু করেছে তৃণমূল। আর এ বার সরাসরি পয়লা বৈশাখের দিনটিকেই ‘বাংলা অস্মিতা’ রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি।

জেলা, টাউন, ব্লক, পঞ্চায়েত, ওয়ার্ড এবং বুথ স্তরের সংগঠনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের মাঝে যাতে বাংলার নববর্ষ হারিয়ে না যায়, সে বিষয়টিও নজরে রেখেছেন বক্সী। নির্দেশিকায় তিনি উল্লেখ করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ দিবসের পাশাপাশি পালন করতে হবে পয়লা বৈশাখও। রাজ্য সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করতে হবে, এবং তা শেষ করতে হবে জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে। বাংলা নববর্ষ এবং পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের হোর্ডিং এবং ব্যানার দিয়ে কর্মসূচির প্রচার করতে হবে।

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করে বিজেপি। তাদের ব্যাখ্যা, এই দিনেই পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিমবঙ্গকে আলাদা করতে সফল হয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাই ওই দিনেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জন্ম, তা ছাড়া কেন দেশভাগ হয়েছিল, এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক মঞ্চে তুলে এনে বাংলার মাটি থেকে রাজনীতির ফসল তুলতে চেয়েছিল বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ২০ জুন দিনটি পালন করা হয় রাজভবনেও। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরই ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে তিনি পশ্চিমবঙ্গ দিবসের দিন ঠিক করতে উদ্যোগী হন। ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ কবে পালন করা হবে তা ঠিক করতে একটি কমিটিও গঠন করেন তিনি। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে কমিটি তৈরি হয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই কমিটি পয়লা বৈশাখকে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসাবে পালন করার সুপারিশ করেছিল। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে নবান্নে সর্বদল বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন। সেই বৈঠকেও পয়লা বৈশাখেই সিলমোহর দেন বেশিরভাগ মানুষ। পরে বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে মুখ্যমন্ত্রী পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের ঘোষণা করে দেন।

২০২৩ সালের পশ্চিমবঙ্গ দিবস সরকারি ভাবে ঘোষিত হয়ে গেলেও, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের কারণে তৃণমূল দলগত ভাবে তা পালন করতে পারেনি। তবে সরকারি মহলে ছোট করে হলেও পালিত হয়েছিল দিনটি। আর এ বার পয়লা বৈশাখের প্রায় এক পক্ষকাল আগেই লিখিত নির্দেশ দিয়ে ‘বাংলা অস্মিতা’ জাগরূক করার বার্তা দিলেন তৃণমূলের বক্সী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement