২০ কোটি টাকা উদ্ধারের পর কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া। নিজস্ব চিত্র
যথেষ্ট উদ্বেগজনক ছবি। মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা। বুধবার রাতে ইডির দাবি মোতাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে নগদ টাকার স্তূপ উদ্ধার প্রসঙ্গে বলেই দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক ছবি। আবার বলছি, যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এটাকে কোনওমতেই আড়াল করার চেষ্টা আমি করব না। এ একেবারেই কাম্য নয়। এটা মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা। এত টাকা এক জায়গায় জমিয়ে রাখা আলিবাবার গল্পে দেখা গিয়েছিল! এই ছবি আমাদের পক্ষে গর্বের নয়, কলঙ্কের। গোটা পরিস্থিতিটাই অস্বাভাবিক।’’
পাশাপাশিই কুণাল বলেছেন, ‘‘আমরা দোষীকে আড়াল করার চেষ্টা করব না। এত টাকা কে রাখল, কারা রাখল, কী ভাবে রাখল, তা তদন্ত করে তাদের সম্পর্কে ইডি ন্যূনতম তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করলে দল উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’ কুণালের কথায়, ‘‘দল গোটা বিষয়টার উপর নজর রাখছে। দলের শীর্ষনেতৃত্ব যথাসময়ে ব্যবস্থা নেবে।’’
বুধবার রাতে অর্পিতার অন্য একটি ফ্ল্যাট থেকে প্রাথমিক ভাবে ২০ কোটি টাকা উদ্ধারের পর তৃণমূলকে কটাক্ষ করে টুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লেখেন, ‘টান টান উত্তেজনা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর কে জিতবে? বেলঘরিয়া না টালিগঞ্জ? টাকা উদ্ধারে এগিয়ে বাংলা!’ তিনি আরও লেখেন, ‘পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানো চলছে।’
শুভেন্দুর মন্তব্যের পাল্টা আক্রমণে কুণাল বলেন, ‘‘পেয়াঁজের খোসা ছাড়ানোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। বেশি ছাড়ালে চোখ দিয়ে জল বেরোবে।’’ বিরোধী দলনেতার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘‘তাঁর সঙ্গে তো পার্থ’দার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। ওঁর সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতেন উনি। নারদ এবং সারদা মামলায় অভিযোগ রয়েছে ওঁর সম্পর্কে। তা হলে ওঁকে কেন গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে না ইডি?’’
তবে পার্থ সম্পর্কে কোনও ‘সহানুভূতি’র সুর কুণালের গলায় শোনা যায়নি। উল্টে তিনি বলেন, ‘‘পার্থ’দার একবারও এটা বলার নৈতিকতা নেই যে, তিনি নির্দোষ। আমাকেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তখন তো আমাকে কথা বলতে দিত না পুলিশ। কিন্তু পার্থ’দাকে তো সংবাদমাধ্যম কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছে! তিনি কেন এ কথাটা বলতে পারছেন না যে, তাঁর কোনও দোষ নেই। আমার মুখপাত্র হিসেবে আর কী বলার আছে!’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘এ দৃশ্য বাংলার মানুষ কখনও দেখেনি। বাংলায় মমতার নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে ব্যাঙ্ক অব মমতা। এই ব্যাঙ্ক অব মমতায় সব চোরাই মাল রাখা হয়। এর পরও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কোন মুখে বলেন, যখন বিচার হবে তখন দেখা যাবে।’’