বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা। নিজস্ব চিত্র।
বেলঘরিয়ার রথতলায় অভিজাত আবাসনে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে এখনও পর্যন্ত ২০ কোটি টাকা গোনা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর সোনার বাট এবং রুপোর কয়েন। টাকা গোনা শেষ হতে রাত কাবার হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সন্ধ্যা থেকে চারটি নোট গোনার যন্ত্র দিয়ে চলে টাকা গোনা। ইডি সূত্রে খবর, প্রথম রাউন্ডে ১৫ কোটি টাকা গোনা সম্ভব হয়। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই আরও ৫ কোটি টাকা গোনা হয় বলে খবর পাওয়া যায়। ফলে এখনও পর্যন্ত ২০ কোটি টাকা গুনতে পারলেন ব্যাঙ্ককর্মীরা। এ ছাড়াও পাওয়া গিয়েছে প্রচুর সোনার বাট। যার বাজারমূল্য অন্তত দু’কোটি টাকা হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। উদ্ধার হয়েছে রৌপ্যমুদ্রাও। বেশ কিছু দলিলও পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। টাকা নিয়ে যেতে বেলঘরিয়ার ক্লাব টাউন হাইটস আবাসনে প্রবেশ করেছে ট্রাক। সেই ট্রাকে রয়েছে ২০টি ট্রাঙ্ক। ট্রাঙ্কে উদ্ধার হওয়া টাকা ভরে নিয়ে যাওয়া হবে।
সন্ধ্যায় জানা গিয়েছিল, ‘পার্থের ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ন’তলার ফ্ল্যাটে মিলেছে আরও টাকার হদিস। সেই টাকা গোনার জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে আসেন ব্যাঙ্ককর্মীরা।
এসবিআই থেকে বড় চারটি টাকা গোনার যন্ত্র এল বেলঘরিয়ার ক্লাব টাউন আবাসনে। নিজস্ব চিত্র।
সূত্রের খবর, টাকা গোনার যে যন্ত্রগুলি আনা হয়েছে তা অত্যাধুনিক। পরিভাষায় ‘কারেন্সি কাউন্টিং মেশিন’। এই যন্ত্র দিয়ে প্রতি পাঁচ সেকেন্ডে ১০০টি নোট পর্যন্ত গোনা সম্ভব। সাধারণত কারেন্সি চেস্টে বড় অঙ্কের টাকা গুনতে এই ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর থেকেই মনে করা হচ্ছে, টালিগঞ্জের পর বেলঘরিয়ায় অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকেও বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করতে চলেছে ইডি।
বুধবার, বেলা ১২টা নাগাদ বেলঘরিয়ার ক্লাব টাউন আবাসনের ন’তলার ফ্ল্যাটের সামনে পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। কিন্তু ফ্ল্যাটটি তালাবন্ধ অবস্থায় ছিল। চাবির খোঁজ না মেলায় ডাকা হয় এক চাবিওয়ালাকে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক চেষ্টা করার পরও তালা ভাঙতে পারেননি তিনি। অতঃপর, ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে ফেলেন তদন্তকারীরা। তার পর সোজা ঢুকে পড়েন অর্পিতার বন্ধ ফ্ল্যাটে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছয় ইডির আরও একটি দল। তাঁরা একটি প্রিন্টার সঙ্গে করে ঢুকে যান ফ্ল্যাটে। চলে তল্লাশি। বিকেল নাগাদ খবর পাওয়া যায়, ওই ফ্ল্যাটে নগদের হদিস পাওয়া গিয়েছে। ব্যাঙ্ককর্মীদের একটি দল নোট গোনার মেশিন নিয়ে পৌঁছন অকুস্থলে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার টালিগঞ্জের একটি অভিজাত আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি টাকা ও গয়না, বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে ইডি। তার পর জানা যায়, বেলঘরিয়াতেও ফ্ল্যাট রয়েছে পার্থ-ঘনিষ্ঠের। বুধবার সকালে সেখানেই অভিযান চালায় ইডি।