প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র
বিজেপির সঙ্গে ভোটযুদ্ধের বেশির ভাগটাই হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়— এই মূল্যায়ন থেকেই তৃণমূলের ভোট-প্রচারের জমি তৈরি করতে চাইছেন প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। তাই গ্রাম হোক বা শহর, সব বিধানসভা কেন্দ্রে ফেসবুক পেজ তো বটেই, দলের টুইটার এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও চান তিনি। কী ভাবে এই সাইবার যুদ্ধ চলবে, তা বোঝাতে একেবারে পেশাদার রেখে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন পিকে।
গত সপ্তাহে পিকের সেক্টর ফাইভের অফিসে জেলাভিত্তিক এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, প্রত্যেক তৃণমূল বিধায়কের ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে দলের ভোট প্রচারের অন্যতম অস্ত্র করতে চাইছেন তিনি। তাঁদের অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার ‘লাইক’ চান তিনি। কী ভাবে এই ‘লাইক’ আদায় করা যাবে, সে ব্যাপারে বিধায়কদের প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন পিকের সংস্থার পেশাদারেরা।
প্রশিক্ষণে বলা হয়েছে, এ বারের নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়াই হবে তৃণমূলের প্রধান প্রচারমাধ্যম। কারণ এই মাধ্যমে কম খরচে, কম সময়ে অনেক বেশি লোকের কাছে পৌঁছনো সম্ভব। দলীয় সূত্রে খবর, গত এক বছরে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক আবেদন, অভাব-অভিযোগ, দাবি, নালিশ এসেছে। তার মধ্যে ৩০ লক্ষ আবেদন গ্রাহ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সব আবেদনের ভিত্তিতে সরকার বা দলের তরফে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। বিধায়কদের প্রচারের সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সেই তথ্য জুড়ে দিতে তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভাবে যুক্ত হচ্ছেন টিম পিকের সদস্যেরা।
প্রত্যেক বিধায়ককে ফেসবুকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা ‘লাইভ’ থাকতে বলা হয়েছে। এই পরিকল্পনা রূপায়ণে টিম পিকে এতটাই কড়া যে, কেউ এই কাজ করতে না-পারলে পরিবর্ত হিসেবে একাধিক তৃণমূল কর্মীকে তৈরি রাখছে তারা। গত শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান ও হুগলি থেকে আসা বিধায়কদের প্রতিনিধিরা এই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। চলতি মাসেই বাকি জেলাগুলির প্রশিক্ষণ শেষ করা হবে। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘নির্বাচন পরের বছর হলেও যত বেশি সম্ভব সময় নিয়ে কাজ করতে চাইছে টিম পিকে। এই পরিকল্পনা কার্যকর করা গেলে বিজেপি নেতারা যখন হেলিকপ্টার নিয়ে ভোটের প্রচারে আসবেন, তখন আমরা অনেকটা এগিয়ে থাকব।’’